বাংলাদেশের চলতি অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে রফতানি আয় কমেছে। গত রোববার প্রকাশিত সরকারি প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত মার্চ থেকে রফতানিতে অধোগতি শুরু হয়েছে এবং চলতি জুনেও তা অব্যাহত রয়েছে।
এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর উপাত্ত অনুযায়ী, গত মে মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি কমেছে ৪.১৭ শতাংশ। যেখানে গত বছর এসময় রফতানি ছিল ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এছাড়া গত মার্চে রফতানি আয় ৭.২৩ শতাংশ কমে যাওয়ার পর এপ্রিলে কমে যায় ৭.১৩ শতাংশ।
শেষ প্রান্তিকে এসে এ হারে রফতানি আয় কমে যাওয়ায় চলতি অর্থ বছরের রফতানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
সরকারি তথ্য উপাত্তে দেখা যাচ্ছে, ২০১১-১২ অর্থ বছরের প্রথম ১১ মাসে গত বছরের তুলনায় মাত্র ৭ শতাংশ বেড়ে রফতানি খাতে মোট আয় হয়েছে ২ হাজার একশ’ ৯৮ কোটি ডলার। যেখানে অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৬শ’ ৫০ কোটি ডলার।
অবশ্য অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত সময়ে অন্যতম রফতানি পণ্য তৈরি পোশাক শিল্প থেকে রফতানি আয় গত বছরের তুলনায় ১৪.৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭শ’ ২৭ কোটি ডলার।
তা সত্ত্বেও চলতি মাসেই ২০১১-১২ অর্থ বছরের শেষ হবে তাই রফতানি খাতে গত ১১ মাসের মোট আয়ের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ তার রফতানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থ বছরের এ রফতানি লক্ষ্যমাত্রা গত অর্থবছরের রেকর্ড লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৩শ’ কোটি ডলারের চেয়ে ১৫ শতাংশ বেশি।
এদিকে বাংলাদেশের রফতানি আয় কমে যাওয়ার বড় কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ইউরোজোনের ঋণ সঙ্কট। এদেশের অন্যতম প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাক। আর এ পণ্যের বড় আমাদনিকারক ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্র।
অব্যশ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সস্তা শ্রমের বাজার বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক তৈরি পোশাকের বাজার স্থানান্তরিত হওয়ায় এ দেশের অর্থনীতি ও রফতানি আয় বহুগুণে বেড়েছে। আগে এ বাজারে একচেটিয়া প্রভাব ছিল চীনের।
প্রসঙ্গত, আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশ সরকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৭.২ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাজারে রেমিটেন্সের পাশাপাশি তৈরি পোশাক শিল্পের দৃঢ় অবস্থানের প্রেক্ষিতে আগামী অর্থবছরে ২০১৩ সালের মধ্যে রফতানি বাজার চাঙ্গা হওয়ার আশা করছে সরকার।