সিরিয়ার প্রধান বিরোধী গ্রুপগুলোর সংগঠন সিরিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিলের (এসএনসি) নতুন নেতা নির্বাচিত হয়েছেন কুর্দি নেতা আবদুল বাসেত সিয়েদা।
ইস্তাম্বুলে গত শনিবার এসএনসির ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট কাউন্সিলের সাধারণ সভায় আবদুল বাসেতকে তিন মাসের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হয়। সুইডেন প্রবাসী আবদুল বাসেতই প্রেসিডেন্ট পদে একমাত্র প্রার্থী ছিলেন বলে জানা যায়।
এর আগে এসএনসির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন বুরহান ঘালিউন। গত বছরের আগস্টে কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বারবার নবায়ন করার মাধ্যমে এ পদে আসীন ছিলেন ঘালিউন।
কাউন্সিলের সবচেয়ে প্রভাবশালী দল মুসলিম ব্রাদারহুড ঘালিউনকেই আবার এসএনসির প্রেসিডেন্ট পদে বসাতে চাইলেও অন্য বিরোধী গ্রুপগুলোর চাপের মুখে সে অবস্থান থেকে সরে আসে তারা।
জানা যায়, এসএনসির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য আদিব আল শিহাকলিও পুনরায় ঘালিউনের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের বিরোধিতা করেন। তেমনটি হলে পদত্যাগ করবেন বলে হুমকি দেন আদিব।
বিরোধী সূত্রগুলো জানিয়েছে, সিয়েদা নির্বাচিত হওয়ায় এখন বিরোধীদের সংগঠনের মধ্যে কুর্দিরা অন্তর্ভূক্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি হল। সিরিয়ার ২ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ১০ লাখ কুর্দি। আর বাশার বিরোধী আন্দোলনের ১৫ মাসে এরা বড় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করা হয়।
সিরিয়ার কুর্দি অঞ্চলে একাধিকবার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বিরোধী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে তবে তারা দেশব্যাপী বিক্ষোভ প্রতিবাদে প্রকাশ্যে অংশ নেয়নি।
এর বড় কারণ হিসেবে মনে করা হয়, কুর্দি ওয়ার্কার্স পার্টিকে (পিকেকে) সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট আসাদ। গত বছরের মার্চে বিক্ষোভ শুরুর পর আসাদ বিরোধী কুর্দিদের হত্যার জন্য এ দলটিকে সন্দেহ করা হয়। এ দলটির সঙ্গে তুরস্কেরও সংঘাত চলছে। আর তুরস্ক বাশার আল আসাদের বড় সমালোচক।
এদিকে গত শনিবার সরকার সমর্থক সশস্ত্র গ্রুপের হামলায় ৮৩ জন বেসামরিক নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ব্রিটেনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস।
তারা জানিয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ শহর দারায় নিহত ২০ জনের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। বিদ্রোহের কেন্দ্র হোমস শহরে সরকারি বাহিনীর বোমা বর্ষণে নিহত হয়েছে ২৯ জন।
অপরদিকে হোমসের হুলা শহরের ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের কয়েক দিন আল কুবাইর এলাকার দু’টি গ্রামে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের আলামত সংগ্রহ করেছে জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক দল। গত শনিবার তারা সেখানে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হওয়ার প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তবে নিহতের সংখ্যা নিরুপন করতে পারেননি।
গত বছরের মার্চে সিরিয়াতে শূরু হওয়া প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাত বিরোধী বিক্ষোভে সিহংসতায় এ যাবত সাড়ে ১৩ হাজার প্রাণ হারিয়েছে বলে জানা যায়।