গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচিত সরকারকে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে আলটিমেটাম দিয়ে পতন ঘটানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন দপ্তরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।
শনিবার জাতীয় জাদুঘরে সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক সেমিনার, সম্মাননা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ কাস্টমস এজেন্টস মানবাধিকার সোসাইটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
মন্ত্রী বলেন, “আমাদের দেশে নাগরিকদের অনেক অধিকার রয়েছে কিন্তু তার মধ্যে মানবাধিকার একেবারেই ভিন্ন। রাষ্ট্র যদি কোনো নাগরিকের মৌলিক অধিকার নষ্ট করে তবে সে হাইকোর্টে যেতে পারে।”
তিনি বলেন, “আমাদের দেশের স্বাধীনতা দীর্ঘ মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। এটি কেউ টেবিলে বসে আমাদের হাতে তুলে দেয়নি। মুক্তিযুদ্ধে আমাদের দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। সে সময় পাকি বাহিনীসহ এ দেশের তাদের মনোনীত দোসররা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। তাদের শাস্তি দেওয়ার জন্য দীর্ঘ ৪০ বছর পর ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। কিন্তু এক শ্রেণীর লোক এ ট্রাইব্যুনালের কাজকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য ট্রাইব্যুনাল নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছে।”
তিনি বলেন, “কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছে ট্রাইব্যুনালের কাজ যেন আইন সম্মত হয়, আন্তর্জাতিক মানসম্মত হয়। আরও কত কি প্রশ্ন। কিন্তু আমি তাদের উদ্দেশ্য করে বলতে চাই যারা ১৯৭১ সালে আমার মা বোনের শ্লীলতাহানী করেছিল, সাধারণ মানুষকে যারা গুলি করে মেরেছিল তখন তাদের এমন প্রশ্ন কোথায় ছিল?
আজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হচ্ছে। যেমন- ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ইত্যাদি। সেসব দেশে অপরাধীদের জন্য আপিল করার কোনও ব্যবস্থা রাখা হয়নি। কিন্তু আমাদের দেশে অপরাধীরা যদি মনে করে তাদের বিচার সঠিক হয়নি তবে আপিল করতে পারবে।”
প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে তিনি বলেন, “অনেকে বাজেটের আকার নিয়ে অনেক প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু আমি বলতে চাই, এতো বড় দেশে বাজেট তো একটু বড় হবেই। কারণ এদেশের মানুষ বেশি। আর বাজেট যত বেশি হবে তত দেশের উন্নতি, সমৃদ্ধি বেশি হবে।”
এছাড়া আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমেই এ দেশের সরকার পরিবর্তন হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক সাংসদ হাজী মো. সেলিম, ড. মীর্জা জলিল, গোলাম হাবিব দুলাল, ম্যাজিস্ট্রেট রোকন উদ-দৌলা, মো. আতাউল্লাহ খান, ম. খালেকুজ্জামান, সামসুর আলম খান রিজভী প্রমুখ।