৩০ বছরের পুরনো ডিসি-১০ কিংবা এয়ারবাস নয়, এবার সদ্য কেনা বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর উড়োজাহাজ (পালকি) বসে (গ্রাউন্ডেড) গেছে। বোয়িং ৭৭৭-এর গুরুত্বপূর্ণ নেভিগেশন যন্ত্রাংশ নষ্ট হওয়ায় শনিবার উড়োজাহাজটি বসে যায়। উড়োজাহাজটি কেনার ছয় মাসের মাথায় তা বসে গেল।
এর আগে গত ১ জুন বিমানের সবগুলো ডিসি-১০ গ্রাউন্ডেড হয়ে যায়। এর এক সপ্তাহের মাথায় নতুন প্রজন্মের উড়োজাহাজ বোয়িং ৭৭৭ অচল হয়ে গেল। বিমান সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজের ইঞ্জিনের পরই নেভিগেশন যন্ত্রাংশ সবচেয়ে দামি। এর কারিগরি নাম এয়ারডাটা ইনারশিয়াল রেফারেন্স ইউনিট। এটি দ্রাঘিমাংশ মাপার যন্ত্র। এর আনুমানিক মূল্য ১৪ লাখ মার্কিন ডলার। বৈমানিক যখন আকাশে থাকেন তখন নেভিগেশন যন্ত্রাংশ উড়োজাহাজের অবস্থান নির্দেশ করে।
গত বছরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা হয় বোয়িং ৭৭৭ (অরুণ আলো)। উড়োজাহাজটি সপ্তাহ খানেক আগে নেভিগেশন যন্ত্রাংশে সমস্যা দেখা দেয়। এরপর স্ট্যান্ডবাই নেভিগেশন সিস্টেম দিয়ে উড়োজাহাজটি চালানো হয়। নেভিগেশন যন্ত্রটি আসলে নষ্ট হয়েছে কিনা তা বোঝার জন্য বিমানের প্রকৌশল শাখা তা খুলে অপর কেনা নতুন পালকিতে (বোয়িং ৭৭৭) ব্যবহার করে পরীক্ষা চালায়। এ সময় পালকির নেভিগেশন খুলে অরুণ আলোতে ব্যবহার করা হয়। এরপর থেকে নষ্ট যন্ত্রটি পালকিতেই থাকে। পালকিও স্ট্যান্ডবাই (বিকল্প) নেভিগেশন সিস্টেম দিয়ে চালানো হয়। শেষ পর্যন্ত শনিবার সকালে পালকি হ্যাঙ্গারে নিয়ে আসা হয়।
সূত্র জানায়, বোয়িংয়ের কাছ নতুন নেভিগেশন যন্ত্র আনার অর্ডার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই যন্ত্রাংশটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় বিমানের নষ্ট যন্ত্রটি হাতে না পাওয়া পর্যন্ত নতুনটি পাঠাবে না বোয়িং।
এটি আসতে কমপক্ষে তিনদিন সময় লাগবে। আর দেরি হলে এটি আসতে সাত থেকে ১৫ দিন সময় লাগতে পারে। এই মুহূর্তে নতুন দুটি বোয়িং বিমান বহরের অন্যতম নির্ভরযোগ্য উড়োজাহাজ। এতদিন বসে থাকলে বিমানের ফ্লাইট শিডিউলে বিপর্যয় দেখা দেবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন।
বিমানের একজন প্রকৌশলী বাংলানিউজকে জানান, যদি দেখা যায় এটি বিমানের দোষে নষ্ট হয়নি তাহলে বোয়িং এটি পাল্টে নতুন যন্ত্রাংশ দেবে। কিন্তু তা না হলে এর মূল্য বিমানকে পরিশোধ করতে হবে।
তবে বিমানের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, বিমানের নিজস্ব ভুলেই এটি নষ্ট হয়েছে। বিমানের উড়োজাহাজ কেনার সময় এপিইউ (অগজিলিয়ারি পাওয়ার ইউনিট) না কেনাতেই নষ্ট হয়ে গেছে।’