বিপিএল নিয়ে বড্ড ঝামেলায় আছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। খেলোয়াড়দের বকেয়া আদায়ে আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটার্স এসোসিয়েশন (ফিকা)। এমন কি ভবিষ্যতে বিপিএলে না খেলার জন্য ক্রিকেটারদের আহ্বান জানিয়েছেন ফিকা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টিম মে।
ফিকা সিইও’র দাবি, ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলোচনা করে তারা জানতে পেরেছেন বকেয়া সম্মনী পরিশোধ করা হয়নি। কিন্তু তিনি নির্দিষ্ট করে কোনো খেলোয়াড়ের অভিযোগ সম্পর্কে বলেননি। এমন কি বিসিবির কাছে এখন পর্যন্ত কোনো ক্রিকেটার অভিযোগ দেয়নি। ফলে বিসিবি গ্যারান্টার হিসেবে ক্রিকেটারদের সম্মানী দিতে চাইলেও পারছে না। বিসিবি সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল শনিবার ভারত থেকে মোবাইলফোনে বাংলানিউজকে বলেন, ‘ফিকা কর্মকর্তা টিম মে নিয়মিত অভিযোগ করে যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি একজন প্লেয়ারের নামও বলছেন না যাকে বকেয়া পারিশ্রমিক দেওয়া হয়নি। কোনো ক্রিকেটার অভিযোগ না করলে গ্যারান্টার হিসেবে বিসিবি কাকে টাকা দেবে?’
বিদেশি ক্রিকেটারদের বকেয়া পরিশোধের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। বেশির ভাগ ক্রিকেটার তাদের চুক্তির পুরো টাকা পেয়েছেন। দেশের ক্রিকেটারদেরও ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পাওনা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করছেন ফ্রেঞ্চাইজিরা। আবার অনেকে সেই প্রথম যে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ সম্মানী পেয়েছেন পরে আর এক টাকাও দেওয়া হয়নি। মোস্তফা কামালের বলছেন, ‘কোনো ক্রিকেটারের টাকা না দিয়ে কেউ পার পাবে না। প্রথম আসর হওয়ায় কিছু সীমাবদ্ধতা ছিলো। সে জন্য টাকা দিতে বিলম্ব হয়েছে। কিন্তু কোনো ফ্রেঞ্চাইজি বলেনি তারা ক্রিকেটারদের বকেয়া পরিশোধ করবে না। বিসিবি অনিয়ম করেনি। অনিয়মকে প্রশ্রয়ও দেবে না। গত এক মাসে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। যদি কোনো বিদেশি ক্রিকেটারের টাকা বাকি থাকে তাহলে তাকে অনুরোধ করবো বিসিবিকে জানাতে। আমরা তার টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করবো। আমাদের খেলোয়াড়দের বেশির ভাগ টাকা পেয়েছেন। তারাও বাকি টাকা পাবেন।’
ফিকার প্রধান নির্বাহী টিম মে ক্রিকইনফোকে বলেছেন, ‘এটা সাদা এবং কালোর মতো ব্যাপার। চুক্তি অনুযায়ী কতজন ক্রিকেটারের অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে। আর কোন তারিখে তারা সেটা বুঝে পেয়েছেন? যদি ফ্রাঞ্চাইজিরা চুক্তির শর্ত অনুযায়ী সেটা না করে থাকে তাহলে গ্যারান্টার হিসেবে ক্রিকেটারদের পাওনা আদায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করার কথা বিসিবির।’
বিসিবিও বলে আসছে কোনো ক্রিকেটার অভিযোগ করলে তাকে বকেয়া পরিশোধ করে দেওয়া হবে। কেউ অভিযোগ না করায় শেষপর্যন্ত তা হচ্ছে না। কিন্তু টিম মে বিষয়টিকে তুলে ধরছেন অন্য ভাবে, ‘আমরা চারমাস অপেক্ষা করেছি। বেঁধে দেওয়া সময় পার হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এতো দিন ধরে শুধু আশার বাণী শুনিয়েছে। আমরা এমন অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছি যেখানে সংলাপে বসার সকল পথগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। ফিকার আবেদনে সাড়াও দিচ্ছে না বিসিবি।’
ফিকা কর্মকর্তার ক্রিকেটারদের প্রতি আবেদন, ‘ক্রিকেটারদের প্রতি আমাদের পরামর্শ হচ্ছে যদি ব্যাংক গ্যারান্টি অথবা টাকা বুঝে না পান তবে ভবিষ্যতে বিপিএলে অংশ নেবেন না।’
বিপিএলে খেলোয়াড় সম্মানীর ইস্যুতে টিম মে পরক্ষ হুমকিও দিয়েছেন বিসিবি সভাপতিকে, ‘মোস্তফা কামাল প্রতিনিয়ত আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। তিনি আইসিসিতে সভপতি প্রার্থী। ক্রিকেটারদের সম্মানী না দেওয়ায় তার ইমেজ ক্ষুণœ হবে।’