রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাই বাজেট বাস্তবায়নের বড় চ্যালেঞ্জ বলে মত দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। জাতীয় ঐক্যমত নিশ্চিত করা গেলে বড় আকারের এ বাজেটও বাস্তবায়ন করা সম্ভব। সে সঙ্গে আর্থিক ব্যবস্থাপনার ওপর কড়া নজর রাখা জরুরি বলে মত দেওয়া হয়েছে।
শুত্রুবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় সমন্বিত উন্নয়ন ফাউন্ডেশন আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনা সভায় এসব মতামত তুলে ধরা হয়।
সভায় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মজিদ বলেন, বাজেটে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়াতে পারলে এ বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব।
তিনি বলেন, বাজেটের সমালোচনা করা সহজ। কিন্তু বর্তমান সময়ে এর চেয়ে ভালো বাজেট কেউ দিতে পারবে না। ঘাটতি না রেখে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশের পক্ষে নিজস্ব সম্পদের ওপর বাজেট ঘোষণা করা সম্ভব না।
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ভালো একটি অর্থনীতির ভীত এখনই তৈরি করতে না পারলে আগামীতে যারাই ক্ষমতা আসবে, তাদের জন্য অর্থনীতিকে সামাল দেওয়া কঠিন হবে ।
রাজস্ব বোর্ডের সাবেক এই চেয়ারম্যান বলেন, ১ জুলাই থেকে বাজেট বাস্তবায়ন করার যে পদক্ষেপ ঘোষণা করা হয়েছে, তা এবারে বাজেটের ইতিবাচক দিক। বাজেট বাস্তবায়ন করার লক্ষে অর্থবছর এপ্রিল-মার্চ করারও প্রস্তাব দেন তিনি।
সব পক্ষ সমানভাবে বাজেট বাস্তবায়নে সহযোগিতা করলে প্রবৃদ্ধি ৭.২ নয় আরো বাড়িয়ে ৮ শতাংশ করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন ড. আব্দুল মজিদ।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন বলেন, গণমুখী ও সাধারণ মানুষের একটা বাজেট অর্থমন্ত্রী উপহার দিয়েছেন। ওষুধসহ প্রয়োজনীয় কয়েকটি জিনিসের দাম কমানো হয়েছে, যা সাধারণ মানুষের পক্ষে যাবে। বাড়ানো হয়েছে বিলাসী পন্যের দাম। অংকে বড় হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা থাকলে এ বাজেট বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, বাজেটে সরকারের নিবার্চনী চেহারাই বেশি পরিস্ফূট হয়েছে। পরিবেশ, দারিদ্র্য বিমোচন, গ্রামীণ অর্থনীতি, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি বাড়ানো ইত্যাদি ইতিবাচক দিক।
তিনি বলেন, বাজেট বাস্তবায়ন করতে হলে অর্থমন্ত্রীকে আর্থিক ব্যবস্থাপনার দিকে কড়া নজর রাখতে হবে। রাজনৈতিক পরিবেশ অস্থিতিশীল হলে বাজেট বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।
নিবার্চনী বাজেট দেওয়া হয়নি দাবি করে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মজিবুর রহমান বলেন, অর্থমন্ত্রী একটি ভিশনারি বাজেট ঘোষণা করছেন।
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. এম আফজাল হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অংশ নেন রুপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আহমেদ আল কবির, ঢাকা ওয়াসার বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রহমতুল্লাহ, ডেভেলপমেন্ট কনস্ট্রাকশন লিমেটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী নুরুল আমিন, গণপূর্ত অধিদফতরের সাবেক প্রকৌশলী এ কে এম মুকিতুর রহমান, ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক ডেপুটি মেয়র খালেকুজ্জামান চৌধুরী প্রমুখ।