পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ায় সৃষ্ট বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবেলায় চুল্লিগুলো পুনরায় চালুর ওপর জোর দিলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী। বিশ্বব্যাপী মন্দার কারণে হুমকির মুখে পড়া অর্থনীতিকে রক্ষা করতে এবং জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অক্ষুন্ন রাখতে কমপক্ষে দু’টি চুল্লি এখনই চালু করতে হবে বলে উল্লেখ করেন জাপানি প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিকো নোদা। জাপানের টেলিভিশনে তার এ বক্তব্য প্রচারিত হয় বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম।
প্রাথমিকভাবে জাপানের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত ওহি পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের দুটি চুল্লির কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা হবে বলে জানান তিনি। চুল্লিগুলো চালুর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সব নিরাপত্তা ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই নিশ্চিত করা হয়েছে বলেও তিনি এ সময় উল্লেখ করেন।
গত বছরে জাপানে সংঘটিত মারাত্মক ভূমিকম্প ও প্রলয়ংকরী সুনামির কারণে জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সুনামিতে প্লাবিত হওয়ার সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটির পরমাণু চুল্লির মধ্যে পানি প্রবেশ করে। ফলে তৎসংলগ্ন এলাকা মারাত্মক দূষণের কবলে পড়ে। এই বিপর্যয়ের পরপরই জাপান সরকার দেশটির বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত প্রায় ৫০ টি পরমাণু চুল্লি ক্রমান্বয়ে বন্ধ করে দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত মে মাসে জাপানের হোক্কাইডো দ্বীপে অবস্থিত সর্বশেষ পরমাণু চুল্লিটি বন্ধ করে দেয় জাপান সরকার।
পারমাণবিক দূষণের বিরুদ্ধে জাপানে জনমত জোরদার হওয়ার প্রেক্ষিতে এই চুল্লিগুলো বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় সরকার। কিন্তু বিকল্প বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা না থাকায় চলতি গরমের মৌসুমে জাপানকে ব্যাপক বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবেলা করতে হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী নোদা বলেন,‘ এই মুহুর্তে জাপানের প্রয়োজন সস্তা ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ। মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৩০ শতাংশ সরবরাহ করা পরমাণু চুল্লিগুলোর কয়েকটি যদি পুনরায় চালু না করা যায় তবে জনজীবন অচল হয়ে পড়বে।’
বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যেই তাদের শিল্প উৎপাদন ইউনিট জাপানের বাইরে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে বলেও এ সময় উল্লেখ করেন তিনি। বিদ্যুৎ ঘাটতি অব্যাহত থাকলে দেশের কর্মসংস্থানের ওপর মারাত্মক প্রভাব সৃষ্টি হবে বলেও তিনি সর্তক করে দেন।