মার্কিন সেনাবাহিনীতে আত্মহত্যার প্রবণতা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। চলতি বছরে দিনে গড়ে অন্তত একজন সেনা আত্মহত্যা করেছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে জানা গেছে।
বার্তাসংস্থা এপি জানিয়েছে, দায়িত্বরত সেনাদের মধ্যে চলতি বছরের প্রথম ১৫৫ দিনে ১৫৪টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ সংখ্যা আফগানিস্তানে সম্মুখ যুদ্ধে বা আত্মঘাতী হামলায় নিহত মার্কিন সেনা সংখ্যার অন্তত ৫০ ভাগ বেশি।
এছাড়া আরো উদ্বেগের কথা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় ১৪ লাখ সেনার মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। এমনকি বিষণ্নতা বা অন্যান্য সমস্যায় আক্রান্ত সেনাদের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নিতে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করার পরও এ প্রবণতা কমছে না।
তবে সেনা সদস্যদের মধ্যে এভাবে আত্মহত্যা প্রবণতা বাড়ার কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ জানতে পারেনি প্রতিরক্ষা দপ্তর। অবশ্য সাধারণভাবে যে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছে তা হলো- সম্মুখ যুদ্ধ, আঘাতজনিত কারণে পরবর্তী মানসিক চাপ, ওষুধের অপব্যবহার এবং ব্যক্তিগত আর্থিক সমস্যা।
এ সমস্যাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে সম্প্রতি মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনে ডিফেন্স সুইসাইড প্রিভেনশন অফিস খূলেছে। এর প্রধান জ্যাকি গ্যারিক গত বৃহস্পতিবার স্বীকার করেছেন, মার্কিন সেনাবাহিনীতে চলতি বছরে আত্মহত্যার পরিসংখ্যান আসলেই বিব্রতকর।
তিনি বলেন, ‘সেনা বাহিনীতে আত্মহত্যার সংখ্যা কমিয়ে আনার জন্য যখন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি তখন চলতি বছরে এ উচ্চহার নিয়ে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।’
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান দুর্বল অর্থনীতি এ প্রবণতা প্রতিরোধের প্রচেষ্টাকে শোচনীয় অবস্থায় ফেলতে পারে। এমনকি বিভিন্ন স্থানে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি শিথিল করা হলেও এ সমস্যা থাকবে বলে মনে করছেন জ্যাকি গ্যারিক।
তিনি বলেন, ২০১০ এবং ২০১১ সালে আত্মহত্যার মাত্রাটি কিছু সহনীয় ছিল। কিন্তু চলতি বছরে এমন ঘটনা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় কিছু কর্মকর্তা বিস্মিত।
যুক্তরাষ্ট্র সেনা বাহিনীর সংগৃহিত উপাত্তে দেখা যায়, বারবার সম্মুখ যুদ্ধে পাঠালে সেনা সদস্যদের আত্মহত্যা করার ঝুঁকি বাড়ে। অবশ্য কোথাও অভিযানে নিয়োগ বা ঘাঁটিতে মোতায়েন করা হয়নি এমন সেনা সদস্যদের মধ্যেও আত্মহত্যার ঘটনা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ।