১৮ দলীয় নেতাদের জামিন প্রশ্নে রুলের শুনানি পেছালো

১৮ দলীয় নেতাদের জামিন প্রশ্নে রুলের শুনানি পেছালো

গাড়ি পোড়ানোর মামলায় কারাবন্দী ১৮ দলীয় জোট নেতাদের জামিন প্রশ্নে দেওয়া রুলের শুনানি একদিন পিছিয়েছেন হাইকোর্ট।

বুধবার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ দিন ধার্য করেন।

১৮ দলীয় জোট নেতাদের আইনজীবী ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান সাংবাদিকদের জানান, সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোন্দকার দীলিরুজ্জামান শুনানির জন্য একদিনের সময় আবেদন করেন। সেই প্রেক্ষিতে আদালত শুনানি একদিন পিছিয়ে বৃহস্পতিবার ধার্য করেন।

প্রসঙ্গত, ২৭ মে এ মামলায় পাঁচ সাংসদকে জামিন দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১৮ দলীয় জোট নেতাদের কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।

এর আগে ২৩ মে জামিন আবেদন নাকচ করে বিচারিক আদালতের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে রোববার সকালে হাইকোর্টে আবেদন করেন তাদের আইনজীবীরা।

গত ১৬ মে তারা ঢাকার সিএমএম আদালতে আত্মসর্মপণ করলে মহানগর হাকিম এরফান উল্লাহ জামিন আবেদন নাকচ করে তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

ওইদিন জামিন নাকচের পর আসামিদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া ও অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম বিকাশ কুমার সাহার কাছে জামিন আবেদন পুনর্বিবেচনার আবেদন করলে বিচারক তাও নাকচ করে দেন।

এ মামলার আসামিরা হলেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার, স্থায়ী কমিটির সদস্য বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খোন্দকার মোশাররফ হোসেন, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম ফজলুল হক মিলন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, সংসদ সদস্য ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন  চৌধুরী এ্যানী,  স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিবুন-উন-নবী খান সোহেল, সাধারণ সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আমীরুল ইসলাম খান আলীম, সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার, ঢাকা মহানগর যুবদলের সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম মজনু, বিজেপির  চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, ঢাকা মহানগর উত্তরের স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ইয়াছিন আলী, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নীরব, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তির চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নিলু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক আ. মতিন, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কামাল আনোয়ার আহমেদ লিটু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিব, বিএনপি নেতা ও ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার আবুল বাসার, বিএনপি  নেতা ও ৪০ নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নেতা লুৎফর রহমান ওরফে এল রহমান, বিএনপির সাবেক ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক নবী সোলায়মান, খিলগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি সাবেক কমিশনার ইউনুছ মৃধা ও মোহাম্মদপুর থানার স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মান্নান হোসেন শাহীন।

উল্লেখ্য, গত ২৯ এপ্রিল বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোটের ডাকা হরতালের পর রাত ৯টা ৫ মিনিটে  তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে একটি গাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে হরতাল সমর্থকরা।

এ ঘটনায় তেজগাঁও থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক ইসমাইল মজুমদার বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় দ্রুত বিচার আইনের ৪ ও ৫ ধারায় এ মামলা দায়ের করেন।

মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১৮ দলীয় জোটের ৪৪  নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।

গত ১০ মে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জোটের ৪৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর নুরুল আমিন।

২১ মে সব আসামির বিরুদ্ধেই চার্জশিট আমলে নেন সিএমএম আদালত। ওই দিন জামিনে থাকা একমাত্র আসামি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের জামিন আবেদনও নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

তবে, মামলার অপর চার্জশিটভুক্ত আসামি জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল হোসেন, ঢাকা মহানগর জামায়াত নেতা বুলবুল ও ছাত্রশিবিরের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন সাঈদী পলাতক আছেন। তাদের পক্ষে এ পর্যন্ত আদালতে কোনো আবেদন করা হয়নি।

রাজনীতি