মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হবে কি হবে না, সে আদেশ দেওয়া হবে আগামী ২১ জুন।
ওই দিন একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ ও সাক্ষী অন্তর্ভুক্ত করার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের বিষয়েও আদেশ দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল-২ এ আদেশ দেন। এর আগে আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক অভিযোগ গঠনের বিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে শুনানি শেষ করেন। অভিযোগ গঠনের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষ হয় গত ২১ মে।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগের মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে গ্রেফতার করা হয়। একই বছর মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়।
পরে একই বছরের ২ আগস্ট এ ৫ জনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার দেখানো হয়।
গত ১৬ জানুয়ারি মুজাহিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল-১ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। ২৬ জানুয়ারি এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।
এতে মুক্তিযুদ্ধের সময় ফরিদপুরে সাধারণ মানুষকে হত্যা, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অপরাধে মুজাহিদের বিরুদ্ধে ১০৯ পৃষ্ঠার ৩৪টি অভিযোগ করা হয়।
প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ এপ্রিল ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক মামলাটি দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করেন।
স্থানান্তরের আগে ট্রাইব্যুনাল-১ এ অভিযোগ গঠনের আসামিপক্ষের শুনানি সম্পন্ন হলেও মামলা স্থানান্তরের কারণে নতুন করে শুনানি গ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল-২।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কাজ শুরু করার পর এ পর্যন্ত জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম ও বর্তমান ৫ শীর্ষ নেতা এবং বিএনপির ২ নেতাসহ মোট ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তাদের মধ্যে জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম, বর্তমান আমির মতিউর রহমান নিজামী, নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও মোহাম্মদ কামারুজ্জামান এবং বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন ট্রাইব্যুনাল। সাঈদী ও সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণও চলছে।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে একমাত্র বিএনপি নেতা আবদুল আলীম শর্তসাপেক্ষে জামিনে থাকলেও অন্যরা কারাগারে আটক আছেন।
এছাড়া ট্রাইব্যুনাল-২ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরও পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি মওলানা আবুল কালাম আজাদ বাচ্চু রাজাকার। প্রসিকিউশন তার বিরুদ্ধে অগ্রগতি প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে ট্রাইব্যুনালে।