তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার জামিন চাইতে গিয়ে বিএনপির আইনজীবীরা ছয় বিচারপতির বেঞ্চে যেভাবে হাঙ্গামা করেছে, দেশের ইতিহাসে কখনো এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। জামিন শুনানি এক সপ্তাহ পেছানোতে তারা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। খালেদা জিয়ার জামিন হলে তারা কি ঘটাবেন তা অনুমেয়।
তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার তারা বেগম খালেদা জিয়ার জামিন চাইতে গিয়েছিল দেশের সুপ্রিম কোর্টে। যেখানে দেশের প্রধান বিচারপতি উপস্থিত ছিলেন। ছয় বিচারপতির বেঞ্চে তারা যেভাবে হাঙ্গামা করেছে, যেভাবে আদালতের প্রতি হুমকি প্রদর্শন করা হলো, এটি চরম আদালত অবমাননা। আইন ও আদালতের প্রতি চরম অবজ্ঞা। ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে তারা। দেশের ইতিহাসে কখনো এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। অবশ্য এটি তারা প্রথমবার করেছে তা নয়। ইতিপূর্বে তারা প্রধান বিচারপতির দরজায় লাথিও মেরেছে।
আজ শনিবার (০৭ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর ঐতিহাসিক লালদীঘি মাঠে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশের বিচার বিভাগের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখা এবং প্রধান বিচারপতিসহ বিচারপতিদের মর্যাদা সমুন্নত রাখার স্বার্থে যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। জামিন শুনাানি এক সপ্তাহ পেছানোতে এই ঘটনা ঘটিয়েছে, জামিন হলে তারা কী করতে পারে সেটি সহজে অনুমান করা যায়। যদিও তারা কী করেছে অতীতে আমরা দেখেছি। আমি মনে করি, এই বিষয়গুলো বিবেচনা করে যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আদালত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট, ভারতের প্রধানমন্ত্রী, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান অর্থনীতিবিদসহ সমগ্র বিশ্ব প্রশংসা করে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এনিয়ে আক্ষেপ করেন, অথচ শুধু প্রশংসা করতে পারে না বিএনপিসহ তাদের বিশ দলীয় জোট।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নে অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, এই অভিযাত্রাই বিএনপির গাত্রদাহ, তারা পছন্দ করছে না। এজন্য তারা নানা ধরনের কথা বলছে। এখন তাদের রাজনীতির মূল বিষয় হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার হাঁটুর ব্যথা আর কোমরের ব্যথা। তাদের রাজনীতির বিষয় হচ্ছে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের দুর্নীতির রায় কিংবা মামলা।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, গতকাল মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশের সমস্ত ডাক্তারদের প্রতি হুমকি প্রদর্শন করে বলেছেন, ডাক্তারদের ঘাড়ে কয়টা মাথা। এই কথা বলে তিনি দেশের সমস্ত ডাক্তারদের অবজ্ঞা করেছেন। ডাক্তারদের প্রতি হুমকি প্রদর্শন করেছেন। তিনি নিশ্চয়ই জানেন, ডাক্তারদের ঘাড়ে উনার এবং আমার মতো একটি মাথা। ডাক্তারদের ঘাড়ে মাথা বেশি নাই।
তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান রাজনীতিকদের বেচাকেনা করেছেন। জিয়া রাজনীতিকদের হাট বসিয়েছিলেন। আর তাতে অনেক রাজনীতিকদের বেচাকেনা করেছেন তিনি।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপির সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এম এ সালামের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এর আগে সম্মেলন উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার আবদুল মতিন খসরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, শিক্ষা উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, উপ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপ দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।