ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে চিড়িয়াখানা যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আজ বৃহস্পতিবার বিধানসভায় রাজ্যপালের লাইব্রেরি দেখতে যাওয়াকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন তিনি।
পার্থ বলেন, রাজ্যের অনেক জায়গায় আছে যেখানে রাজ্যপাল যেতে পারেন। দক্ষিণেশ্বর মন্দির আছে, কালীঘাট মন্দির আছে। আবার সেখানে চিড়িয়াখানাও আছে। সেখানে গেলে ভালো জনসংযোগ হতে পারে।
গত বুধ-বৃহস্পতিবার বিধানসভার অধিবেশন মুলতুবি রেখেছে রাজ্য সরকার। তার মধ্যেই রাজ্যপাল জানান, লাইব্রেরি দেখতে বৃহস্পতিবার বিধানসভায় যাবেন তিনি। সে অনুসারে আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিধানসভায় যান রাজ্যপাল। কিন্তু তার ঢোকার দরজা বন্ধ রাখা হয়েছিল। এরপরই রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন ধনকড়।
তারপরই ধনকড়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ করে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, উনি ঘুরুন। আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু সরকারের পয়সা নষ্ট করবেন না। কোথাও কিছু হলেই চলে যাচ্ছেন, দাঁড়িয়ে থাকছেন আর ছবি তুলছেন। মানুষের মনে তো প্রশ্ন আসতেই পারে, উনি কি ছবি তোলার জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন?
একইসঙ্গে তিনি আরো বলেন, তার কাজকর্মকে বাংলার মানুষ মোটেই ভালোভাবে নিচ্ছে না। সর্বশেষ রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীকেও দেখেছি। লোকে তার কবিতা শুনতে যেতেন। আর এখন সংবাদমাধ্যম ছোটে, উনি কী ভাষণ দেবেন সেটা শুনতে। এই রাজ্যপাল কী চাইছেন সেটাই বুঝতে পারছি না।
আজ সকাল ১০টা ৩২ মিনিটে বিধানসভার তিন নম্বর গেটে এসে থামে রাজ্যপালের কনভয়। কোনো প্রটোকল নয়, কনভেনশন অর্থাৎ প্রথা অনুযায়ী তিন নম্বর প্রবেশদ্বার রাজ্যপালের জন্যই নির্দিষ্ট থাকে। এর আগে সংবিধান দিবসের দিন তিন নম্বর গেট দিয়েই বিধানসভায় প্রবেশ করেছিলেন তিনি।
আজ তিন নম্বর প্রবেশ দ্বার বন্ধ ছিল। গেটের সামনে প্রায় ১৮ মিনিট অপেক্ষা করার পর অগত্যা সাধারণ দরজা দিয়ে পায়ে হেঁটে ভিতরে ঢুকতে হয় তাকে। ভবনে আজ কেউ কোত্থাও ছিল না।
পুরো ঘটনায় ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল বিধানসভার বাইরে উপস্থিত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, অধিবেশন স্থগিত মানে বিধানসভা বন্ধ নয়। স্পিকার বলেছিলেন আমাকে স্বাগত জানাবেন। সেটা জানতে পেরেই আমি সম্মতি জানিয়েছিলাম চিঠি দিয়ে। কী এমন ঘটল যে স্পিকার অনুপস্থিত থাকলেন? অপমানিত বোধ করছি। গণতন্ত্র এভাবে চলতে পারে না। আজকের ঘটনার লজ্জা আমার নয়, লজ্জা গোটা দেশের, এ লজ্জা গণতন্ত্রের।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, বিধানসভার ব্যাপারটা রাজ্যপালের দেখার বিষয় নয়। ওখানে স্পিকারই শেষ কথা।
ধনকড়কে আক্রমণ করলেও তৃণমূলের মহাসচিব এটাও বলেছেন যে, অতীতে বামপন্থীদের দেখেছি অনেক কড়া কড়া রাজ্যপালকে মোকাবিলা করতে। কিন্তু আমরা তো মোকাবিলা করতে চাই না। সহাবস্থান চাই।