সম্প্রতি দুই দেশের বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার ওপর আরোপিত যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে দর কষাকষির বিষয়েও কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। তবে নিরস্ত্রীকরণের বিষয়টিতে ‘ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে’ বলে জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু এরপর কাজের কাজের কিছুই হয়নি। এরই মধ্যে কয়েকবার পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। কোনো নিষেধাজ্ঞা মানছেন না দেশটির নেতা কিম জন উন।
তবে এবার আরো ক্ষেপেছেন কিম। যুক্তরাষ্ট্রকে বড় ধরনের হুমকিই দিয়ে দিল উত্তর কোরিয়া। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, পরমাণু কর্মসূচির বিষয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আলোচনার অগ্রগতি না হলে যুক্তরাষ্ট্রের পরিণতি ভয়াবহ হবে। বছরের শেষে পিয়ংইয়াং থেকে কি ধরনের ‘ক্রিসমাস উপহার’ পাবে তা নির্ভর করবে ওয়াশিংটনের ওপর।
কিম জন উনের প্রশাসন মার্কিন প্রশানকে চাপে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা চায় মার্কিনিরা পিয়ংইয়াংয়ের ওপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করুক। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যদি অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা হয় তাহলে পিয়ংইয়াং বিপারমাণবিকীকরণ করবে না। আবার বলা হচ্ছে, ৩১ ডিসেম্বরের উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বিপারমাণবিকীকরণ ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত আলোচনা শেষ না করলে এর পরিণাম হবে ভায়াবহ।
উত্তর কোরিয়া বলেছে, আমেরিকা নিজের স্বার্থে পরমাণু সংলাপ থেকে বেরিয়ে যেতে চাইছে। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প প্রশাসন সুবিধা পাওয়ার জন্য এ পরিকল্পনা করছে। এ অবস্থায় পরমাণু আলোচনার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত ওয়াশিংটনের জন্য চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে পিয়ংইয়ং।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রবিষয়ক উত্তর কোরিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি থাইয়ে সং এক বিবৃতি বলেন, আলোচনা থেকে সরে না আসার ব্যাপারে উত্তর কোরিয়া সর্বোচ্চ ধৈর্য্য ধারণ করেছে এবং নিজেই গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন যা কিছু করার আমেরিকাকেই করতে হবে; বিষয়টি এখন তাদের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। তাদের ওপরই নির্ভর করছে ‘ক্রিসমাস উপহার’ হিসেবে মার্কিনিরা কি পেতে যাচ্ছে।
উত্তর কোরিয়া ২০১৭ সালের জুলাই মাসের দিকে প্রথম পরমাণু বোমার পরীক্ষা চালায়। তখন কিম জানান, বোমাগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উপহারের প্যাকেজ। সম্প্রতি কোরিয়া নতুন প্রযুক্তির কয়েকটি বোমার পরীক্ষা চলিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের পরীক্ষায় কোনো ধরনের সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে না যুক্তরাষ্ট্রের জন্য। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে। কারণ এই দুই দেশে হামলা করার মতো সক্ষমতা তৈরি হয়েছে উত্তর কোরিয়ার।