আগামী অর্থবছরের বাজেটে বীমা এজেন্টদের আয়কর কমানোর দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের(বিআইএ) চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে চেম্বার বিল্ডিংয়ের নবম তলায় বিআইএর সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।
শেখ কবির হোসেন বলেন, ‘২০১০-১১ অর্থবছরে যে কোনো অঙ্কের বীমা কমিশনের ওপর উৎস কর ৫ শতাংশ ধার্য করার বিধান রাখা হয়েছে। এই বিধানের ফলে এক টাকা থেকে শুরু করে যে কোনো অঙ্কের কমিশনের ওপর ৫ শতাংশ উৎস কর দিতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘এই কারণে ইন্স্যুরেন্স এজেন্টরা এবং বাংলাদেশের বীমাশিল্প অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবে, বীমা ব্যবসা সম্প্রসারণেও বাধা সৃষ্টি হবে।’
তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, ‘বর্তমান আইন অনুযায়ী বাৎসরিক ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যক্তিগত আয় করমুক্ত রাখা রয়েছে। বীমা এজেন্টদের আয়সীমা একই রকম করা হোক।’
শেখ কবির হোসেন বলেন, ‘পুঁজিবাজারে বীমা কোম্পানির অংশগ্রহণ বাড়াতে এসইসিকে ৩ দফা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ ব্যাপারে এসইসি কোনো পদপেক্ষ নেয়নি। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে আইপিওতে ১০ শতাংশ কোটা, বীমা কোম্পানীর সাবসিডিয়ারি কোম্পানি হিসাবে মার্চেন্ট ব্যাংক স্থাপনের অনুমতি প্রদান এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনার অনুমোদন।’
তিনি বলেন, ‘এসইসি যদি এ বিষয়ে পদপেক্ষ নেয় তাহলে বিমা কোম্পানিগুলো তাদের অর্থ বাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে।’ শেখ কবির আরো বলেন, ‘লাইফ ফান্ডের টাকা গ্রাহকদের। তাই তাদের অর্থে ঝুঁকি নেওয়া সাজে না। যে কারণে আমরা নতুন কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) ১০ শতাংশ কোটা চেয়েছিলাম। কিন্তু এ ব্যাপারে এসইসি কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় বীমা কোম্পানিগুলো ঝুঁকি নিয়ে বিনিয়োগ করেনি।’
তিনি বলেন, ‘ফিনাসিয়াল অ্যাক্ট ২০০২ এ ব্যাংক, বীমা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে লাভের উপর করের হার ছিল ৪০ শতাংশ। পরবর্তীতে ফিনাসিয়াল অ্যাক্ট ২০০৩ এ হার পরিবর্তন করে সাড়ে ৪২ শতাংশ ধার্য করা হয়।’
শেখ কবির আরো বলেন, ‘সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের আয়করের হার ধীরে ধীরে কমানো হচ্ছে। কিন্তু ব্যাংক, বীমার করের হার বৃদ্ধি করা হয়েছে। বীমায় নিয়োজিত কোম্পানিসমূহের আয় করের হার তালিকাভুক্ত কোম্পানিসমূহের আয় করের সমান অর্থাৎ ৩৫ শতাংশ এবং সার চার্জ ২.৫০ শতাংশ। তাই বীমা কোম্পানির করের হার তালিকাভুক্ত কোম্পানির করের হার সমান করার দাবি জানানো হয়।’
এতে করে কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ বৃদ্ধি পাবে, বিনিয়োগ প্রসারিত হবে, শেয়ার হোল্ডারদের ডিভিডেন্ড ও পলিসি হোল্ডারগণের বোনাস বৃদ্ধি পাবে এবং শেয়ার মার্কেটে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক ক্ষুদ্র বীমা গ্রাহকদের ১০০ টাকার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করার সুযোগ করে দিয়েছে। কিন্তু অনেক ব্যাংকই তা পালন করছে না। ফলে গ্রাহকরা নানাভাবে হয়রানি হচ্ছেন।’
এছাড়া বীমা আইন ২০১০ কার্যকরী করার জন্য অনেক বিধি ও প্রবিধান তৈরি করা হয়েছে কিন্তু ১ বছর হতে চললো। এখন পর্যন্ত কোনো বিধি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়নি। এ ব্যাপারে অতিসত্বর গেজেট বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করার জন্য সংবাদ সম্মেলন থেকে জোর দাবি জানানো হয়।