কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, র্যাব, পুলিশ ও আর্মি দিয়ে পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। যে কোন পণ্যের মূল্য নির্ভর করে চাহিদা ও সরবরাহের উপর। গত বছর উৎপাদিত পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ায় কৃষক ঘরে পেঁয়াজ মজুদ করতে পারেনি। এতে ঘাটতি দেখা দেয়। আমদানি পরিকল্পনাসহ নানা কারণে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃহস্পতিবার গাজীপুরে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
গাজীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালার ছিল বৃহস্পতিবার। কর্মশালার উদ্বোধনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বাজার ব্যবস্থাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন। ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে গবেষণা কার্যক্রম তুলে ধরেন ব্রি’র পরিচালক (গবেষণা) ড. তমাললতা আদিত্য। বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কমলারঞ্জন দাস, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস প্রফেসর ড. এম এ সাত্তার মণ্ডল, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. মো. কবির ইকরামুল হক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. আবদুল মুঈদ।
কৃষিমন্ত্রী ড. রাজ্জাক বলেন, ‘গত বছর উৎপাদিত পেঁয়াজ জমি থেকে ওঠানোর সময় প্রচুর বৃষ্টি হয়। এতে বিপুল পরিমান পেঁয়াজ নষ্ট হয়। যার কারণে কৃষক ঘরে পেঁয়াজ মজুদ করতে পারেনি। এতে ঘাটতি দেখা দেয়। তাছাড়া ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিবে আমরা তা বুঝতে পারিনি। এসব কারণে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে যেখানে পেঁয়াজের প্রয়োজন ২৫-২৬ লাখ টন। সেখানে আমদানি হয় দুই হাজার টন, পাঁচশ টন, তিনশ টন। এভাবে প্লেনে পেঁয়াজ এনে বাজার নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি সম্ভব নয়। বাজার নিয়ন্ত্রণের মূল শক্তি চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করা। এ ক্ষেত্রে আমাদের আরো সজাগ ও সচেতন হতে হবে। চালের বাজারে কোন অস্থিরতা নেই। বড়লোকেরা যে চাল পছন্দ করেন সেই চিকন চালের দাম কিছুটা বাড়লেও মোটা চালের দাম তেমন বাড়েনি। আর কৃষকরা এবার যাতে ন্যায্য মূল্য পান সে জন্য এ মৌসুমে ছয় লাখ টন ধান কৃষকদের কাছ থেকে কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে কৃষির অপরা সম্ভাবনা রয়েছে। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হলে কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ, আধুনিকীকরণ ও বাণ্যিজিকীকরণ করতে হবে। দারিদ্র বিমোচনে কৃষি বড় ভূমিকা রাখতে পারে। দারিদ্রসীমা কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে কৃষির অসামান্য ভূমিকা রয়েছে। দেশে ধান উৎপাদনে যে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে, তাতে কৃষি বিজ্ঞানীদের ব্যাপক অবদান রয়েছে। এখন প্রয়োজন কৃষিকে লাভজনক খাতে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালানো।’
আওয়ামী লীগে আগামী সাধারণ সম্পাদক কে হচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক কে হবেন, তা নির্ধারণ করবেন দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি কাউন্সিলরদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করবেন। আমরা কেউ ফ্যাক্টর নই। গঠনতন্ত্র মোতাবেক দলের সভানেত্রী এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।’