আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট সামরিক হস্তক্ষেপ গুটিয়ে নিচ্ছে এবং স্থানীয় বাহিনীর হাতে নিরাপত্তার দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছে। এ সুযোগে চীন ও প্রতিবেশী দেশগুলো ধীরে ধীরে এই ঝুঁকিপূর্ণ কিন্তু প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর দেশটিতে প্রবেশ করছে।
বিশেষ করে আফগানিস্তানের স্বার্থের সঙ্গে চীনের জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি অনেকটা স্পষ্ট ইঙ্গিতবহ। চলতি সপ্তাহে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠেয় শাংহাই কোঅপারেশন অরগানাইজেশন শীর্ষ সম্মেলনেরে একফাঁকে চীনা প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও এবং আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।
বৈঠকে তারা পারস্পরিক সম্পর্ক আরো জোরদার করার লক্ষ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতাসহ অনেকগুলো চুক্তি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে।
তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আফগানিস্তান যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ব্রিটেন এবং আরো কয়েকটি দেশের সঙ্গে অংশীদারি চুক্তি সই করেছে। ২০১৪ সালে আফগানিস্তান থেকে সব বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের পর এসব চুক্তি এক প্রকার ‘বীমা’ হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করছেন আফগান কর্মকর্তারা।
২০১৪ সালের পর নিরাপত্তা সহযোগিতার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র বিশেষভাবে জড়িত থাকবে। আর অবকাঠামো খাতে ভারত ইতোমধ্যে আফগানিস্তানে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে। তুলনামূলক বিচারে আফগানিস্তানে বিনিয়োগের ব্যাপারে চীন অনেক পিছিয়ে রয়েছে।
বেইজিংয়ে চীনা প্রেসিডেন্টন্টে সঙ্গে কারজাইয়ের বৈঠকের ব্যাপারে আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জাহান মুসাজাই বলেছেন, ‘এ বৈঠকের ফলে আমাদের অবস্থান সমুন্নত হবে এবং কৌশলগত সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে।’
চীনের সঙ্গে আফগানিস্তানের সম্পর্কের মধ্যে নিরাপত্তা সহাযোগিতা, অর্থনীতি এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনসহ আরো বিস্তৃত বিষয় অন্তর্ভূক্ত থাকবে বলে জানান তিনি।
অবশ্য নিরাপত্তা সহযোগিতার ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলতে তিনি রাজি হননি। তবে ইউরোপিয়ান মার্শাল ফান্ডের চীন বিশেষজ্ঞ অ্যান্ড্রেুা স্মল বলেছেন, সম্পর্কটি দক্ষিণ এশীয় বিষয় বলেই বিবেচনা করতে হবে। নিরাপত্তা সহযোগিতা বলতে সম্ভবত নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়টিই হবে।
তবে আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য গঠিত বহুপক্ষীয় তহবিলে কোনো ভূমিকা রাখবে না চীন। সে ব্যাপারে তারা ইতোমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছে। ২০১৪ সালের পর এ তহবিল থেকে প্রতি বছর খরচ করা হবে ৪১০ কোটি ডলার। স্মল বলছেন, চীন হয়ত আফগান সেনাদের সরাসরি প্রশিক্ষণ দেবে।
তিনি আরো বলেন, আফগানিস্তান এই মুহূর্তে ২০১৪ সাল পরবর্তী নিরাপত্তা শূন্যতা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এছাড়া প্রতিবেশী দেশগুলো তাদের প্রতি কেমন আচরণ করবে তা নিয়েও আফগান কর্তৃপক্ষ উদ্বিগ্ন। এ কারণে তারা প্রতিবেশীদের সহযোগিতা পেতে বেশ আগ্রহী।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানে চীনের অংশীদারিত্ব খুব কম। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় তারা আফগান আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর সঙ্গে ক্ষুদ্র পরিসরে কাজ করছে।