ভারতে আলোচিত বাবরি মসজিদ মামলার রায় দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। আজ শনিবার এই মামলার রায় দেন ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। আর এই রায় নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এদিকে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে নিজেদের জয় হিসেবেই দেখছে হিন্দু সম্প্রদায়। অন্যদিকে, মুসলিমদের একাংশ সুপ্রিম নির্দেশে একেবারেই সন্তুষ্ট নয়। এখন প্রশ্ন, এর রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে।
এই মামলার রায়কে ঘিরে রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া বুঝতে গেলে, এই রায়ের মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব বুঝে নেওয়া দরকার। প্রথমত, বিজেপি সরকারের আমলে মন্দির তৈরি হচ্ছে। তাই এই রায়ের সুবিধা সরাসরি ভোটবাক্সে পেতে পারে বিজেপি শিবির। যারা হিন্দুত্ববাদে বিশ্বাসী বা যারা হিন্দুত্ববাদের জন্য বিজেপিকে সমর্থন করেন, তাদের মধ্যে এই ধারণা আরো স্পষ্ট হবে যে, বিজেপিই হিন্দুত্ববাদের রক্ষাকর্তা। দ্বিতীয়ত, যে মুসলিমরা এরই মধ্যে বিজেপিকে পছন্দ করেন না, তাদের বিজেপি শিবিরের প্রতি খারাপ মনোভাব আরো বাড়বে।
তাহলে এর প্রভাব ভোটব্যাংকে কিভাবে পড়বে? রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন নানা কথা। তারা জানান, রাম মন্দির তৈরি হলে তার সুবিধা বিজেপি পাবেই। কিন্তু এই রায় এমন একটা সময়ে ঘোষণা করা হলো, যার আশেপাশে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কোনো নির্বাচন নেই। ভোট বলতে, দুটি ছোট রাজ্যে। এক ঝাড়খণ্ড, দুই দিল্লি। দুই রাজ্যেই লড়াইয়ে আছে বিজেপি। দিল্লিতে মন্দির তৈরির কতটা প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে সংশয় আছে। তবে, ঝাড়খণ্ডে এই রাম মন্দিরের প্রভাব পড়বে।
আগামী বছরের শেষের দিকেই বিহারের মহাগুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। তাতে মন্দির তৈরির প্রভাব পড়বে কিনা তা নিয়ে সংশয় থাকলেও কিছুটা সুবিধা যে বিজেপি শিবির পাবে তাতে সংশয় নেই। ২০২১ সালের বাংলার রাজনীতিতেও এর আংশিক প্রভাব পড়তে চলেছে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। এই রাজ্যে যে নব্য হিন্দুত্ববাদীদের উদয় হয়েছে তারা যে মন্দির রায়ের পর আরো সক্রিয় হয়ে যাবে তা বলাই বাহুল্য।
এবার আসা যাক, ২০২২ সালের উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের কথায়। উত্তরপ্রদেশের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে রাম মন্দিরকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। তাই পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে যোগি আদিত্যনাথ যে মন্দির তৈরির সুফল পাবেন, তাতে সংশয় নেই।
কিন্তু ২০২৪ সালে নরেন্দ্র মোদি কি এই সুবিধা পাবেন? সেটা এখনই বলে দেওয়াটা ঠিক হবে না। কারণ, আগামী সাড়ে চার বছরে গঙ্গা দিয়ে যেমন অনেক জল বয়ে যাবে। তেমনই রাজনীতির আঙিনাতেও অনেক পটপরিবর্তন হতে পারে। তাই এই বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করা যাবে না। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ভারতে যেভাবে হিন্দুত্ববাদীদের উদয় ঘটছে তাতে বিজেপি সুবিধা পেতেই পারে। তবে এই রায়ে মুসলমানদের ভোট হারাতে বিজেপি।