নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেই দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে যাত্রী নিয়ে লঞ্চ, ট্রলার, স্পিডবোটসহ অন্যান্য নৌযান চলাচল করেছে। আজ শনিবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাটে উপস্থিত থেকে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করতে দেখা গেছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয় জানায়, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে আজ সকাল থেকেই দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথ উত্তাল ছিল। দুর্ঘটনা এড়াতে আজ বেলা তিনটা থেকে এই লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে লঞ্চ চলাচল করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া ফেরি চলাচলও ছিল নিয়মিত। অনেকেই দুর্ঘটনা এড়াতে লঞ্চের পরিবর্তে ফেরিতে করে নদী পার হচ্ছিলেন।
বিকেল চারটার দিকে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের পন্টুনে বিআইডব্লিউটিএর আরিচা কার্যালয়ের ট্রাফিক পরিদর্শক আফতাব উদ্দিনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তাঁর উপস্থিতিতেই ৪টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত একে একে তিনটি লঞ্চ পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। একইভাবে পাটুরিয়া থেকেও দুটি লঞ্চ ছেড়ে আসে। এ সময় ঘাটে ভেড়ানো লঞ্চ এমভি আরাফাতে ডেকে ডেকে যাত্রী তোলা হচ্ছিল। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও লঞ্চ চলাচলের কারণ জানতে চাইলে আফতাব উদ্দিন বলেন, ‘বেলা তিনটা থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। এতক্ষণ পর্যন্ত লঞ্চ বন্ধ রাখা হয়েছিল। এখন আমি নিজে পাটুরিয়ায় যাব। সঙ্গে কিছু যাত্রীও আবদার করায় এই লঞ্চটিই (এমভি আরাফাত) শেষ ছেড়ে যাবে।’
কিছুক্ষণ পর লঞ্চটি ছেড়ে গেলেও আফতাব উদ্দিনকে পন্টুনেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এরপর আরেকটি লঞ্চে (এমভি অনন্যা) ডেকে ডেকে যাত্রী তোলা শুরু হয়। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে এই লঞ্চটি ছেড়ে যায়। এবার আফতাব উদ্দিন বলেন, ‘আগের লঞ্চেই যাওয়ার কথা ছিল। ওরা অনুরোধ করল পরের লঞ্চে আসতে। এখন বাধ্য হয়ে এই লঞ্চে যেতে হচ্ছে। তবে এরপর ঘাট থেকে আর কোনো লঞ্চ ছেড়ে যাবে না।’
জানতে চাইলে এমভি অনন্যার মাস্টার গাজীউর রহমান বলেন, ‘বেলা সাড়ে তিনটার দিকে পাটুরিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে দৌলতদিয়ায় এসেছি। এতক্ষণ বসে ছিলাম। স্যার (আফতাব উদ্দিন) যাবেন, তাই এখন আবার যাচ্ছি।’
এমভি অনন্যা ছেড়ে যাওয়ার সময় পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে পোঁছায় আরেকটি লঞ্চ এমভি বোয়ালিয়া। শফিকুল ইসলাম নামের এক যাত্রী বললেন, ‘পাটুরিয়ায় এসে দেখি চিৎকার করে বলছে, এটাই শেষ লঞ্চ। মাঝনদীতে আসার পর অনেক ভয় করছিল। লঞ্চটি বারবার এপাশ-ওপাশ দুলছিল।’
নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও লঞ্চ চালানোর কারণ জানতে চাইলে লঞ্চমাস্টার আফজাল হোসেন ‘১৩০ জন যাত্রী নিয়ে সাড়ে তিনটার দিকে লঞ্চ ছাড়ি। নদী উত্তাল থাকায় ১৫ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে সময় লেগেছে পৌনে এক ঘণ্টা। ঝুঁকিপূর্ণ মনে না হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও সাহস করে চলে এসেছি।’