ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র শক্তি ক্রমাগত বেড়ে চলায় এবং সেটি বাংলাদেশ উপকূলের ৫০০ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছে যাওয়ায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেতের পরিবর্তে ৭ নম্বর এবং চট্টগ্রাম বন্দরে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি কক্সবাজারে আগের মতই ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদ আফতাব উদ্দিন জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় এ ঝড় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
ওই সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবিলায় সরকার সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। এরইমধ্যে সংশ্লিষ্ট ২২টি মন্ত্রলণালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর এম মাহবুবুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে উপকূলীয় অঞ্চলের সব ধরনের নৌযান পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে ওইসব এলাকার বিআইডব্লিউটিএর সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আপাতত ঢাকা থেকে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে তবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পরিস্থিতি আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা-বরিশাল সহ দূরপাল্লার অন্যান্য নৌযান বন্ধ করা হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় উপকূলবর্তী সকল জেলা, উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি ও প্রায় ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে উপকূলবর্তী এলাকার জনগণকে।
শনিবার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাতের মধ্যে বুলবুল বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটার এলাকায় বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত করলে ৫ থেকে ৭ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র প্রভাবে সাতটি জেলাকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জেলাগুলো হলো- খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরগুনা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী ও ভোলা।
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ চলাকালীন ও ঘূর্ণিঝড় শেষে উদ্ধারকার্যসহ যেকোনো সহায়তার জন্য প্রস্তুত আছে কোস্ট গার্ড। জরুরি সহায়তার জন্য নিম্নোক্ত ফোন নম্বরগুলোতে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে-
বরিশাল বিভাগ-০১৭৬৬৬৯০৬০৩, খুলনা বিভাগ-০১৭৬৬৬৯০৩৮৩, চট্টগ্রাম বিভাগ-০১৭৬৬৬৯০১৫৩ এবং অতিরিক্ত -০১৭৬৬৬৯০০৩৩।