রাজধানীর কলাবাগান থানায় আটক ‘স্কাই ল্যান্সার’র সদস্য/গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাৎকারী চক্রের হোতা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান নীলের (২৫) বিরুদ্ধে শুক্রবার রাত ১টা পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি।
তবে মামলা দায়ের করা না হলেও আটক নীলকে পুলিশ যাতে আবার ছেড়ে না দেয় বা কেউ যাতে তাকে ছাড়িয়ে নিতে না পারে সেজন্য শুক্রবার দুপুর থেকে থানা পাহারা দিচ্ছেন ‘স্কাই ল্যান্সার’র সদস্য/গ্রাহকরা।
শুক্রবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কলাবাগান থানায় গিয়ে দেখা যায়, ‘স্কাই ল্যান্সার’র প্রায় শ’খানেক সদস্য/গ্রাহক থানা প্রাঙ্গনে জড়ো হয়ে আছেন।
কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক জানান, ‘দুপুর ১টার দিকে নীলকে আটক করা হয়েছে। ‘স্কাই ল্যান্সার’র সদস্য/গ্রাহকরা তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করলেও সুনির্দিষ্টভাবে মামলা দায়ের করতে কেউই এগিয়ে আসছে না’।
তিনি বলেন, ‘কোনো বাদী পাওয়া না গেলে শেষ পর্যন্ত বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে পুলিশের পক্ষ থেকেই মামলা দায়ের করা হবে।‘
‘শক্তভাবেই এ মামলা দায়ের করা হবে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তথ্য প্রমাণ সংগ্রহে প্রয়োজনে রিমান্ডও চাওয়া হবে’।
শনিবার সকালেই তাকে সিএমএম আদালতে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান ওসি এনামুল।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি আরও জানান, আটককৃত নীলসহ প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন ৫ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।
এরা হলেন, ‘স্কাই ল্যান্সার’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম, পরিচালক খোরশেদ আলম, মইন উদ্দিন ও নাঈম আহমেদ।
‘স্কাই ল্যান্সার’ তার সদস্য/গ্রাহকদের কাছ থেকে কী পরিমাণ অর্থ আদায় করেছে এর কোনো আনুমানিক হিসাব পাওয়া গেছে কিনা জানতে চাইলে কলাবাগান থানার ওসি বলেন, ‘সঠিক কোনো হিসাব এখনো পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন জন বিভিন্ন রকম তথ্য দিচ্ছে। তবে আমার যেটা মনে হয় টাকার পরিমাণ ১০ কোটি বা এর বেশিও হতে পারে’।
এদিকে থানা প্রাঙ্গনে উপস্থিত ‘স্কাই ল্যান্সার’ সদস্য/গ্রাহকরা জানান, ‘অন-লাইনে আয়ের কথা বলে ১ লাখ ৮০ হাজার সদস্য সংগ্রহ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
শুরুতে সদস্য ফি বাবদ জনপ্রতি ৭৫০ টাকা করে নেওয়া হলেও পরবর্তীতে জনপ্রতি ৭ হাজার ৫০০ টাকা করে নেওয়া হয়। অতিরিক্ত ফি প্রদানকারী সদস্য সংখ্যা প্রায় ৯০ হাজার।
তারা জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিষ্ঠানটি তাদের কার্যক্রম শুরু করে। এ মাসের প্রথম সপ্তাহেই সদস্যদের প্রাপ্য অর্থ পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু অর্থ পরিশোধ না করে নীলসহ প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা পালিয়ে যাওয়ার পায়তারা করছিলেন।
কয়েকদিন ধরেই তাদের আচরণ সন্দেহজনক মনে হওয়ার সদস্যরা তাদের গতিবিধির ওপর নজর রাখছিল। ফলে ঢাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় গাবতলী বাস স্ট্যান্ড থেকে ‘স্কাই ল্যান্সার’ সদস্য/গ্রাহকরা হাতেনাতে ধরে ফেলে নীলকে।
তাকে প্রতিষ্ঠানের শুক্রাবাদ কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। খবর পেয়ে সেখান থেকে পুলিশ তাকে আটক করে।