সচিবলায়ে ককটেল বিস্ফোরণের মামলায় হামলাকারীদের সনাক্ত না করেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ও ১৮ দলীয় জোটের নেতাদের নামে চার্জশিট দিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
সচিবালয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় শাহবাগ থানা পুলিশ গত বুধবার রাতে সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
মামলার এজাহারে যে দুইজন অজ্ঞাতপরিচয় মোটরসাইকেল আরোহী বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায় চার্জশিটে তাদের সনাক্ত করা হয়নি। তদন্ত কর্মকর্তার দাখিল করা চার্জশিটেও ওই দুই মোটরসাইকেল আরোহীকে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
চার্জশিটে অভিযুক্ত ২৯ আসামির মধ্যে কেউ মোটরসাইকেল আরোহী ছিলেন এমন কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি।
চার্জশিটে বলা হয়েছে, বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর মুক্তির দাবিতে বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোটের ডাকা হরতালের আগে মামলার আসামিরা বিভিন্ন সভা-সমাবেশে জ্বালাও-পোড়াওসহ বিভিন্ন উস্কানিমূলক বক্তব্য দেন করে বলে জানা যায়।
এতে বলা হয়েছে, ‘মামলার তদন্তে ও সাক্ষ্য প্রমাণে আসামিরা পারস্পরিক সহযোগিতা, ষড়যন্ত্র, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশ, প্ররোচনা, উস্কানি, আর্থিক সহযোগিতা ও বিস্ফোরক দ্রব্যাদি সংগ্রহে সহযোগিতার মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এর মাধ্যমে তারা সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ক্ষতি করাসহ গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে সচিবালয়ের ২ নং গেটের বাইরে এবং এর সীমানা প্রাচীরের ভেতরে গাড়ি পার্কিং গ্যারেজের পশ্চিম পাশে অজ্ঞাতাপরিচয় দুইজন মোটরসাইকেল আরোহী দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায় বলে। এ অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হলো।’
উল্লেখ্য, গত ২৯ এপ্রিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা হরতাল চলাকালে সচিবালয়ের ভেতরে ও বাইরে দুইটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় শাহবাগ থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়।
মির্জা ফখরুল ছাড়া চার্জশিটভুক্ত অপর ২৮ আসামি হলেন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুস সালাম, ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিবুন-উন-নবী খান সোহেল, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নীরব, সাধারণ সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খোন্দকার মোশাররফ হোসেন, সংসদ সদস্য ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এমপি, সৈয়দা আশিফা আশরাফী পাপিয়া এমপি, শাম্মী আক্তার শিফা এমপি, বেগম রেহানা আক্তার রানু এমপি, নীলুফার চৌধুরী মনি এমপি, বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবদুল মতিন, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার, যুবদলের সহ-দফতর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল, বিএনপির সাবেক নির্বাহী কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান রতন, মোরতাজুল করিম বাদরু, রেহানা আক্তার ডলি ওরফে রেহানা ইয়াসমিন ডলি ও মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন ভূঁইয়া ওরফে বাদল।
ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুস সালাম, যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুবদলের সহ-দফতর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল, এমপি সৈয়দা আশিফা আশরাফী পাপিয়া, এমপি শাম্মী আক্তার শিফা, এমপি বেগম রেহানা আক্তার রানু, এমপি নীলুফার চৌধুরী মনি, মোরতাজুল করিম বাদরু, রেহানা আক্তার ডলি ওরফে রেহানা ইয়াসমিন ডলি ও মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন ভূঁইয়া ওরফে বাদল ছাড়া অপর ১৮ আসামি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে গাড়ি পোড়ানোর মামলায়ও আসামি।
আসামিদের মধ্যে সংসদ সদস্য ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ ১১ জন জামিনে আছেন। অপর আসামিরা কারাগারে আছেন।