বিএনপিকে সংসদের বাজেট অধিবেশনে যোগ দিয়ে বিভিন্ন বিষযে অভিযোগ তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান।
তিনি বলেন, ‘বাজেট আলোচনায় অংশ নেওয়া বিএনপির দায়িত্ব। তবে এর মানে এই না সরকারে সব মতামতের সঙ্গে একমত পোষণ করা।’
শু্ক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ভোরের কাগজ আয়োজিত ‘বাজেট : ২০১২ কর প্রস্তাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের বাজেটকে প্রাণহীন আচার অনুষ্ঠান অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘সংসদে বাজেট বিষয়ে খুব বেশি হলে তিন সপ্তাহ আলোচনা হয়। এ সময়কালের মধ্যে আবার বড় একটা সময় বাজেট বহির্ভুত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়।’
‘তার ওপর এ আলোচনায় জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ নেই বললেই চলে। তাহলে তো একটা এসআরও (স্টেটিউটরি রেগুলেটরী অর্ডার) মাধ্যমেও বাজেট করা যায়। এ ধরনের অনিয়ম মেনে নেওয়া যায় না।’
আকবর আলী খান বলেন, গত দুই বছরের বাজেট অধিবেশনে বিরোধী দল উপস্থিত ছিল না। বাজেট বিষয়ে বিস্তর আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বাজেট করতে হলে তিনটি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। এগুলো হচ্ছে, বিরোধী দলের অংশগ্রহণ, এসআরও প্রি-পাবলিকেশন ও স্ট্যান্ডিং কমিটিগুলোতে আলোচনা।
কর আদায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মানুষ যদি কর দিয়ে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, রাস্তাঘাট নির্মাণ ও মেরামতসহ অবকাঠামোগত এবং অন্যান্য নাগরিক সুযোগ-সুবিধা না পান তবে কর দিয়ে লাভ কি? যখন এসব পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে, অর্থাৎ মানুষ করের সুফল পাবেন তখন সকলেই কর দেবেন।’
বৈঠকে এনবিআর’র সাবেক চেয়ারম্যান বদিউর রহমান বলেন, ‘রাজনীতিবিদরা ঠিকমতো কর দিলে এবং রাজস্ব আদায়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করলে নিয়মের বাইরে কেউ থাকবেন না। তখন দুই লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করাও সম্ভব।’
কালো টাকা বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার আইনজীবী, রাজনীতিবিদ সবার কাছেই কালো টাকা রয়েছে।’
এনবিআর’র সদস্য এমএ কাদের সরকার বলেন, ‘এক সময় বাজেটের আশি শতাংশ হতো বৈদেশিক সাহায্য নির্ভর এবং ২০ শতাংশ এনবিআর’র মাধ্যমে পূরণ করা হত। এ চিত্র এখন পাল্টে গেছে। এখন আশি শতাংশ মেটাতে হয় এনবিআরকে। আর বিশ শতাংশ আসে বৈদেশিক সাহায্য থেকে। ভবিষ্যতে বিদেশ নির্ভরতা আরো কমে আসবে। চাপ বাড়বে এনবিআর’র ওপর। তাই এনবিআরকে শক্তিশালী করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।’
কর হারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যত বেশি লোক কর প্রদান করবেন, রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ততো বাড়বে এবং মাথাপিছু করের পরিমাণও কমে আসবে।
ভোরে কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থান করেন আয়কর আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বৈঠকে আরো অংশ নেন, ইংরেজি দৈনিক ফাইনানসিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন, আমাদের সময়ের সম্পাদক নাইমুল ইসলাম খান, ঢাকা স্টক একচেঞ্জ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ রশিদ লালি, সাংসদ শাহ জিকরুল আহমেদ প্রমুখ।