সিরিয়ার চলমান সঙ্কটকে আরো গভীর করে তোলার জন্য রাশিয়ার কঠোর সমালোচনা করলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। তিনি বৃহস্পতিবার দেওয়া এক বক্তব্যে সিরিয়ার পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে করার জন্য রাশিয়াকে অভিযুক্ত করে বলেছেন বাশার আসাদকে সমর্থন দেওয়ার তাদের(রাশিয়া) নীতি সিরিয়াকে একটি সর্বাত্মক গৃহযুদ্ধের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
গত সপ্তাহের হুলা হত্যাকাণ্ডের পর সিরিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের প্রস্তাবিত কঠোর পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রাশিয়া ও চীন অবস্থান নেওয়ার পরপরই হিলারি ক্লিনটন এ মন্তব্য করলেন।
এদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বৃহস্পতিবার আবারও সর্তক করে দিয়ে বলেছেন সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি দেশটিকে একটি ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার সিরিয়ার হুলা গ্রামে সংঘটিত গণহত্যার প্রেক্ষিতে তিনি এ হুশিঁয়ারি উচ্চারণ করেন।
সিরিয়ার বেসামরিক জনগণের ওপর সরকারি বাহিনীর অব্যাহত হামলার মুখে দেশটির সরকার বিরোধী যোদ্ধারা কফি আনানের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে। তারা সর্তক করে দিয়ে বলেছে অবিলম্বে সিরীয় বাহিনী তাদের ব্যারাকে ফিরে না গেলে তারা যুদ্ধবিরতি থেকে বেরিয়ে আসবে।
এ প্রসঙ্গে বিরোধী যোদ্ধাদের নেতা কর্নেল কাসিম সাদ্দাদিন বলেন যদি সিরীয় বাহিনী শুক্রবারের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবিত শর্ত মোতাবেক বেসামরিক এলাকা থেকে সরে না যায় তবে তারাও আর এই চুক্তির প্রতি বাধ্য থাকবে না।
ডেনমার্ক সফরে থাকা হিলারি ক্লিনটন বৃহস্পতিবার বলেন,‘সিরিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপের পটভূমি দিন দিনই শক্তিশালী হচ্ছে। রাশিয়ানরা আমাকে বলেছে তারা সেখানে(সিরিয়া) গৃহযুদ্ধ দেখতে চায় না। কিন্তু আমি তাদের বলেছি আপনাদের নীতি গৃহযুদ্ধের আশঙ্কাকেই জোরদার করছে।’ ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে এক বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
অপরদিকে তুরস্কে এক সম্মেলনে অংশ নেওয়া জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন সিরিয়ার ক্ষমতাসীনদের কার্যক্রমে ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন,‘ শুধুমাত্র নিরপরাধ মানুষের হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করার জন্য সিরিয়ায় জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকদের পাঠানো হয়নি।’
তিনি এ সময় বলেন,‘ ধারাবাহিকভাবে নিরপরাধ মানুষের হত্যাকাণ্ড সিরিয়াকে এমন একটি ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের দিকে নিয়ে যাচ্ছে যার ক্ষত কখনও শুকোবে না।’ এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা বলেছে সিরিয়ার গত শুক্রবারের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তারা একটি বিশেষ তদন্ত পরিচালনা করবে।
এ পর্যন্ত সিরিয়ার সরকার বিরোধী আন্দোলনে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। গত বছরের মার্চে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের একনায়কতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে জনগণ।