বাংলাদেশ ক্রিকেট দল আগামী মাসে ভারত সফরে যাচ্ছে। এই সফরে ম্যান ইন ব্লুদের বিপক্ষে ৩টি টি-টুয়েন্টি ও ২টি টেস্ট ম্যাচ খেলবে সাকিব আল হাসানের দল। টাইগারদের ভারত সফর শুরু হবে টি-টুয়েন্টি সিরিজ দিয়ে। আর ১৪ নভেম্বর থেকে শুরু হবে টেস্ট সিরিজ। সাদা পোশাকের দ্বিতীয় ম্যাচটি মাঠে গড়াবে আগামী ২২ নভেম্বর। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে হতে যাওয়া ম্যাচটি মাঠে বসেই দেখবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মূলত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) নতুন সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলীর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েই বাংলাদেশ-ভারতের ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচটি মাঠে বসে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। শেখ হাসিনার কলকাতা টেস্ট দেখতে যাওয়ার বিষয়টি সোমবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সিএবিকে ই-মেইল করে জানানো হয়েছে।
কলকাতা টেস্ট আয়োজনের দায়িত্বে থাকা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল (সিএবি)-এর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বেশ কয়েকদিন আগেই।
এর আগে প্রথমবার ভারত সফরে গিয়ে টাইগাররা শুধু একটি টেস্ট ম্যাচ খেলেছিল। যেটা হয়েছিল হায়দ্রাবাদে। কেন সেই ম্যাচ বাঙালিদের শহর কলকাতার আইকনিক ইডেন গার্ডেন্সে আয়োজন করা হলো না, তখন তা নিয়ে উঠেছিল নানা প্রশ্ন।
সেই আক্ষেপ ঘুচিয়ে দিয়ে এবারে বাংলাদেশ-ভারত টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচটির ভেন্যু হিসেবে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সকে বেছে নেওয়া হয়েছে। আর টেস্ট ম্যাচটি আলাদা মাত্রা পেতে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতির মধ্য দিয়ে।
তবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এই সিদ্ধান্তের কথা সিএবি-কে জানালো এমন পরিস্থিতিতে, যখন সাকিব আল হাসানসহ বাংলাদেশের সব তারকা ক্রিকেটাররা বিভিন্ন দাবিতে ধর্মঘটে নামার হুমকি দিয়েছেন।
তাদের এই ধর্মঘট ডাকার ফলে বাংলাদেশের আসন্ন ভারত সফর ঘিরেও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। কিন্তু শেখ হাসিনার কার্যালয় যে এই সফরকে ঘিরে কোনও আশঙ্কার ছায়া দেখছে না, তা প্রধানমন্ত্রীর কলকাতা যাওয়ার সিদ্ধান্ত থেকেই স্পষ্ট।
চলতি মাসের শুরুর দিকে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে দিল্লিতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে হিসেবে কলকাতা টেস্ট দেখতে গেলে মাত্র দেড় মাসের মধ্যেই দ্বিতীয়বারের মতো ভারত সফর করবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেস্ট দেখতে গেলেও সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তার দেখা হবে কিনা, তা অবশ্য নিশ্চিত নয়। তবে সৌরভ গাঙ্গুলীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে আভাস মিলেছে, শেখ হাসিনার সম্মতি পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী মোদীকেও কলকাতা টেস্ট দেখতে আসার জন্য বিশেষ আমন্ত্রণ জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে জয়পুরে ভারত-পাকিস্তান টেস্ট ম্যাচ দেখতে আচমকা হাজির হয়েছিলেন পাকিস্তানের তৎকালীন সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউল হক। জয়পুরের মাঠে জিয়াউল হক ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর পাশাপাশি বসে ম্যাচ উপভোগ করার দৃশ্য উপমহাদেশের ক্রিকেট-কূটনীতিতে একটি অবিস্মরণীয় দৃশ্য হয়ে রয়েছে।