জাতীয় ক্রিকেট দলের স্পন্সর হতে আগ্রহ দেখিয়েছে সাহারা মাতৃভূমি। চার বছরের জন্য ৯৪ লাখ ডলার দিতে চেয়ে দরপত্রে অংশ নিয়েছে ভারতের আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন এই প্রতিষ্ঠানটি।
জাতীয় দলের স্পন্সর চেয়ে অনেক আগে দরপত্র আহ্বান করে বিসিবি। ১৫ মে দরপত্রে অংশ নেওয়ার শেষ সময় ছিলো। কিন্তু গ্রামীণফোনের অনুরোধে ৩০ মে পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়। ২৫ মে সাহারা গ্রুপের কর্ণধার সুব্রত রায় সাহারা বাংলাদেশ সফরে এলে জাতীয় দলের স্পন্সর হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে সাহারা মাতৃভূমি দরপত্রে অংশ নেয়।
তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো গ্রামীণফোন এবং রবি। এই দুই প্রতিষ্ঠানের চেয়ে অনেক বেশি অর্থে জাতীয় দলের স্পন্সর হওয়ার প্রস্তাব দেয় সাহারা। রবি ৪০ লাখ এবং গ্রামীণফোন ৩২ লাখ ডলারে চার বছরের জন্য স্পন্সর হতে দরপত্রে অংশ নেয়। বুধবার দরপত্র উন্মুক্ত করার পর সাহারা মাতৃভূমিকে নির্বাচন করে বিসিবি।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল বিকেলে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন,‘সাহারা আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন একটি প্রতিষ্ঠান। বিশ্বে তাদের সুনাম আছে। তাদের সম্পৃক্ততায় বাংলাদেশের ক্রিকেটও এগিয়ে যাবে।’
বিসিবি এখন স্পন্সর প্রস্তাবনা মূল্যায়ন করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। যদিও বিসিবির আগ্রহ এবং সভাপতি মোস্তফা কামালের কথাতে পরিষ্কার সাহারা মাতৃভূমিই হচ্ছে জাতীয় দলের স্পন্সর। এতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।
জাতীয় দল ছাড়াও বিসিবি একাডেমির স্পন্সর হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে সাহারা মাতৃভূমি। এজন্য বছরে এক লাখ ৩০ হাজার ডলার দেবে তারা।
জাতীয় দল এবং একাডেমিসহ মোট ১২টি বিষয়ের ওপর উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করেছিলো বিসিবি। তারমধ্যে ১০টিতে দরপত্র পড়েছে বলে ব্রিফিংয়ে জানান বিসিবি সভাপতি। ১০টি স্পন্সর থেকে চার বছরে ১১০ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আট বছর পর এই প্রথম গ্রামীণফোন জাতীয় দলের স্পন্সর হতে পারছে না। প্রতি দুই বছর অন্তর অন্তর চার মেয়াদে জাতীয় দলের স্পন্সর হয়েছে গ্রামীণফোন। সর্বশেষ দুই বছরের জন্য ১০ কোটি টাকা দিয়েছে তারা। জিপি-বিসিবি একাডেমি ভবনের পাঁচ বছরের স্পন্সর ছিলো তারা। এজন্য প্রতিবছর দেড় লাখ ডলার বিসিবিকে দিয়েছে জিপি। তাদের চেয়ে ২০ হাজার ডলার কমে একাডেমির স্পন্সর হতে দরপত্রে অংশ নিয়েছে সাহারা মাতৃভূমি।
জাতীয় দলের স্পন্সর বেশি দামে বিক্রি হলে খেলা সম্প্রচার স্বত্ব অনেক বেশি মূল্যে বিক্রি করা সম্ভব হবে বলে জানান মোস্তফা কামাল। শিগগিরই খেলা সম্প্রচার স্বত্বের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হবে বলে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৫ মে ভারতের সাহারা পরিবারের প্রধান সুব্রত রায় সাহারা তার ঢাকা সফরের সময় সাহারা মাতৃভূমি উন্নয়ন নামে একটি প্রকল্পের সূচনা করেন। ওই সময় তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের স্পন্সর হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সাহারা মাতৃভূমি গ্রুপের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্য ও আওয়ামী লীগ সাংসদ শেখ সেলিমের ছেলে শেখ ফাহিম।