‘লিভ বিউটিফুল বা সৌন্দর্যে বাঁচো’- এ শ্লোগান নিয়ে যাত্রা শুরু করা চলতি বছরের লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতা এখন পৌঁছে গেছে চুড়ান্ত পর্বে। ধাঁপের পর ধাঁপ ডিঙিয়ে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা ২০ সুন্দরীর মধ্যে চলছে এখন লড়াই। আগামী শুক্রবার থেকে চ্যানেল আইতে প্রচার শুরু হচ্ছে চুড়ান্ত পর্বের। টিভি সম্প্রচার শুরুর আগে এবারই প্রথম অনুষ্ঠিত হলো এ ধরনের প্রিমিয়ার শো।
রাজধানীর বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে ৩০ মে বুধবার বিকেলে অনুষ্ঠিত ‘লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার ২০১২’-এর প্রিমিয়ার শো রূপান্তরিত হয়েছিল সুন্দরীদের হাটে। আগের বছরগুলোতে অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতার অংশগ্রহণকারীরা ছাড়াও এতে উপস্থিত ছিলেন শোবিজের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তারকা।
প্রাথমিক অডিশন ও ন্যাশনাল সিলেকশন রাউন্ড শেষে আগামী শুক্রবার থেকে চ্যানেল আইতে প্রচার শুরু হচ্ছে এই রিয়েলিটি শোর চুড়ান্ত পর্ব। চুড়ান্ত পর্বের প্রচার শুরুর আগে ২০১২ সালের লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার এ পর্যন্ত ধারণকৃত অংশ প্রদর্শণ করা হয় প্রিমিয়ার প্রদর্শনীতে। এর আগে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রতিযোগিতার সঙ্গে সম্পৃক্ত গুণীজনেরা।
মুনমুনের উপস্থাপনায় শুরুতেই প্রতিযোগিতার প্রেক্ষাপট ও ধারাবাহিকতা সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন নাট্যব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর। তিনি বলেন, নব্বই দশকে একটি পাক্ষিক পত্রিকার সঙ্গে লাক্স যৌথভাবে প্রথম এ প্রতিযোগিতা শুরু করে। সে সময় প্রতিযোগীদের ছবির ভিত্তিতে লাক্স সুন্দরী নির্বাচন করা হতে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ২০০৫ সালে আধুনিক রিয়েলিটি শোর আঙ্গিকে লাক্সের সাথে এ প্রতিযোগিতায় যুক্ত হয় চ্যানেল। দিন দিন এ আয়োজনের ব্যাপকতা বাড়ছে। আমাদের শোবিজ এরই মাঝে এই ইভেন্ট থেকে পেয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পারফর্মার, আগামী দিনেও এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।
আয়োজক ইউনিলিভারের পক্ষে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন লাক্সের ব্রান্ড ম্যানেজার বুশরা ফয়েজ ও চ্যানেল আইয়ের পক্ষে মার্কেটিং ম্যানেজার ঈশিতা। তারা দুজনই এবারের আয়োজন আকর্ষণীয় করে তুলতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার ২০১২-এর চুড়ান্ত পর্বে বিচারকের দায়িত্বে রয়েছেন খ্যাতিমান ম্যাজিশিয়ন জুয়েল আইচ, নির্মাতা ও অভিনেতা তৌকীর আহমেদ, নির্মাতা ও অভিনেত্রী আফসানা মিমি এবং অভিনেত্রী তারিন।
ম্যাজিশিয়ন জুয়েল আইচ শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, আমার চেয়ে বড় ম্যাজিশিয়ন হলো এই প্রতিযোগিতার চুড়ান্ত পর্বে অংশ নেওয়া ২০ প্রতিযোগী। কারণ তাদের প্রত্যেককে ৩০ সেকেন্ড করে সময় দেওয়া হয়েছিল নিজেদের সম্পর্কে বলার জন্য। তারা এতো অল্প সময়ে নিজেদের সম্পর্কে এতো চমৎকার ধারণা দিয়েছেন যে, এটি আমার ম্যাজিকের মতো মনে হয়েছে।
তৌকীর আহমেদ বলেন, আমাদের টিভিমিডিয়ার পরিধি দিন দিন বাড়ছে। নতুন নতুন চ্যানেল আসছে। প্রয়োজন পড়ছে অনেক অনুষ্ঠানের, অনেক নাটকের। লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার ইভেন্ট প্রতি বছর নতুন নতুন মেধাবী মুখ আমাদের মিডিয়ায় যুক্ত করে শিল্পী সংকট কাটাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
অভিনেত্রী তারিন বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে গেছে সৌন্দর্যের সংজ্ঞা। রূপের পাশাপাশি গুণও এখন সমান গুরুত্বপূর্ণ। রূপে ও গুণে নিজেদের প্রমাণ করেই এবারের লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার চুড়ান্ত পর্বে উঠে এসেছে ২০ প্রতিযোগী। এদের মধ্য থেকে সেরা নির্বাচন করার কাজটি সত্যিই কঠিন।
প্রতিযোগিতার অপর বিচারক আফসানা মিমি তার পেশাগত ব্যস্ততার কারণে প্রিমিয়ার প্রদর্শনীতে উপস্থিত থাকতে পারেন নি।
এবারের লাক্স চ্যানেল আই সুপার স্টারের চুড়ান্ত পর্বের অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন তরুণ নির্মাতা মাসুদ হাসান উজ্জ্বল। প্রিমিয়ার প্রদর্শনীতে শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি বলেন, এ ধরণের রিয়েলিটি শোতে কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার এই প্রথম। নাটক নির্মাণের অভিজ্ঞতা থেকেই আমি এখানে এসেছি। চেষ্টা করছি ফিকশনের আমেজ ছাড়িয়ে দর্শকদের নতুন কিছু উপহার দেওয়ার। এবার অনুষ্ঠান ধারণ করা হচ্ছে এইচডি ফরম্যাটে। আমার জানামতে, বাংলাদেশে এতো বিশাল আয়োতনের একটি রিয়েলিটি শো এই প্রথম এইচডিতে ধারণ করা হচ্ছে। দর্শকদের ভালো লাগলেই আমাদের প্রচেষ্টা সার্থক হবে।
উল্লেখ্য, লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার ইভেন্টের ২০০৫ সালের প্রথম আয়োজন বিজয়ীর হন শানারৈ দেবী শানু। ২০০৬ সালের সুপারস্টার খেতাব বিজয়ী হন জাকিয়া বারী মম। ২০০৭ সালে সুপারস্টার খেতাব জিতেন বিদ্যা সিনহা মিম। ২০০৮ সালে বিজয়ী হন চৈতি। ২০০৯ সালে মেহজাবিন ও ২০১০ সালের শিরোপা জিতে নেন রাখি। ৭ম বারের মত এবারের আয়োজনেও বেরিয়ে আসবে ২০১২ সালের লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টারের সেরা সুন্দরী।
খেতাব বিজয়ীর পাশাপাশি এ ইভেন্ট থেকে বেরিয়ে আসা অনেক প্রতিযোগীই মিডিয়াতে নিজেদের স্থান করে নিয়েছেন। যাদের মধ্যে ঝলমলে ক্যারিয়ার গড়ে তুলেছেন বিন্দু, বাঁধন, মুনমুন, রাহা, আলভী, ফারিয়া, সূচনা, আমব্রিন, জয়া, উর্মি, রাহি, ইশানা, অর্ষাসহ আরও অনেকে।
প্রতিবারের মতো এবারও লাক্স-চ্যানেল আই সুপার স্টার বিজয়ী পাবেন একটি ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি। প্রথম রানার আপ পাবেন নগদ ৫ লাখ টাকা। দ্বিতীয় রানার আপ পাবেন ৩ লাখ টাকা। চতুর্থ থেকে ১০ম বিজয়ীদের দেয়া হবে নগদ ১ লাখ টাকা। এ ছাড়া থাকছে অভিনয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক শিক্ষাবৃত্তি ও বিভিন্ন উপহার সামগ্রী।
প্রিমিয়ার শোতে এবারের ধারণকৃত কয়েকটি পর্বের পাশাপাশি আগের আয়োজনগুলোর কিছু ফুটেজ প্রদর্শন করা হয়। চ্যানেল আইতে এই রিয়েলিটি শো দেখানো হবে প্রতি শুক্র ও সোম রাত সাড়ে আটটায়।