জামিন পেলে কিংবা কোনো শর্তে মুক্তি পেলেই সংসদে যাবেন এমন ঘোষণা দিয়েছেন সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী। তিনি বলেছেন, এ মুহূর্তে বিএনপি বা খালেদা জিয়া সংসদে না গেলেও তিনি যাবেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধ করার জন্য অভিযুক্ত বিএনপি নেতা সাকা চৌধুরীকে বুধবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করে তার সংসদে যোগ দেওয়ার আবেদনের ওপর শুনানি করা হয়। শুনানি শেষে বিচারকরা তাদের আসন ছেড়ে যাওয়ার পর প্রসিকিউশন সদস্য জেয়াদ আল মালুমকে উদ্দেশ্য করে এ কথা বলেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।
ট্রাইব্যুনাল সাকা চৌধুরীর সংসদে যোগ দেওয়ার বিষয়ে আবেদনের ওপর বৃহস্পতিবার আদেশ দেওয়ার দিন ধার্য করেছেন। গত ২৫ মে এ আবেদন করেন তিনি।
ট্রাইব্যুনাল কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর সাকা চৌধুরী উচ্চ শব্দে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুমকে উদ্দেশ্য করে বলতে থাকেন, “খালেদা জিয়া যাক না যাক, জামিন পেলে আমি এই বান্দা অবশ্যই সংসদে যাব।”
এর উত্তরে জেয়াদ আল মালুম বলেন, “আপনি এভাবে সংসদে গেলে তো বহিষ্কার হয়ে যাবেন।“
জবাবে সাকা চৌধুরী স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে অট্টহাসি দিয়ে বলেন, “আমি বহিষ্কার, আবিষ্কার দুটোই হই। বহিষ্কার হলে আবার আবিষ্কারও হবো।“
বুধবার আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল ১-এ শুনানিতে অংশ নেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর প্রধান আইনজীবী আহসানুল হক এবং ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন জেয়াদ আল মালুম।
বুধবার শুনানিতে আহসানুল হক বলেন, “আসামিকে যদি জামিন দেওয়া হয় তাহলে তিনি জামিনের কোনো শর্ত ভঙ্গ করবেন না। যতদিন পার্লামেন্ট অধিবেশন থাকবে ততদিন তিনি ঢাকা ছেড়ে কোথাও যাবেন না। এমনকি চট্টগ্রামেও নয়। এই ট্রায়ালের ক্ষতি হয় এমন কোনো কাজ করবেন না।“
অপরদিকে জেয়াদ আল মালুম বলেন, “আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট ৭৩ অনুযায়ী জামিন দেওয়ার বিধান নেই।“
তিনি বলেন, “এখানে এরশাদের উদাহরণ আনা হয়েছে কিন্তু এরশাদ এ আইনের আওতায় ছিলেন না। কাজেই এ উদাহরণ এখানে প্রযোজ্য হবে না।“
তিনি আরো বলেন, “বিএনপি সংসদে নেই এবং তারা সংসদে যোগদানের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। সতরাং তার সংসদে যাওয়ার বিষয়টি ধোঁয়াচ্ছন্ন।“
এসময় পাল্টা যুক্তি জবাবে আহসানুল হক বলেন, “সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী সংসদে যাবেন এবং এ সংসদ অধিবেশনে যোগ দেবেন।“
তিনি এর পক্ষে সর্বশেষ উদাহরণ দিয়ে বলেন, “গাড়ি পোড়ানো মামলায় ৩৩ জনের মধ্য থেকে সম্প্রতি ৫ জনকে জামিন দেওয়া হয়েছে। কারণ তারা সংসদে যোগ দেবেন।“