প্রসঙ্গ ‘ভ্যাটিলিক’: অবশেষে নীরবতা ভাঙ্গলেন পোপ

প্রসঙ্গ ‘ভ্যাটিলিক’: অবশেষে নীরবতা ভাঙ্গলেন পোপ

ভ্যাটিকান থেকে গোপন তথ্যফাঁসের কেলেঙ্কারির ব্যাপারে নীরবতা অবশেষে ভঙ্গ করলেন পোপ। ভ্যাটিলিক কেলেঙ্কারি বলে অভিহিত এ তথ্য ফাঁসের ঘটনায় বুধবার পোপ বেনেডিক্ট ষোড়শ প্রথমবারের মত সরাসরি কোনো কিছু বলেন। এর আগে এই কেলেঙ্কারি নিয়ে ইতালীয় এবং বিশ্ব মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হলেও নিশ্চুপ ছিলেন পোপ। সমালোচকরা বলেছেন এই ঘটনায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভ্যাটিকানের মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়েছে। যদিও ভ্যাটিকান সব সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে বলেছে কোনো ধরণের অনৈতিক কর্মকণ্ডের সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

তবে এতদিন সংবাদমাধ্যমের কৌতূহল এবং জিজ্ঞাসাবাদের আক্রমন সামলেছেন ভ্যাটিকানের অন্যান্য কর্মকর্তারা। তবে যার ব্যক্তিগত আবাস থেকে গোপন দলিলগুলো চুরি যায়, তিনিই এতদিন নিশ্চুপ ছিলেন। অবশেষে বুধবার সাপ্তাহিক ভাষণ দেওয়ার সময় এ প্রসঙ্গে প্রথম কথা বললেন পোপ। ভাষণের শেষের দিকে তিনি বলেন, এই ঘটনায় তিনি মর্মাহত, তবে একই সঙ্গে তিনি তার বাকি ব্যক্তিগত সহকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা এতদিন ধরে বিশ্বস্ততার সঙ্গে কাজ করে আসছেন এবং প্রশাসনিক কাজে তাকে নীরবে সাহায্য করে আসছেন।

এ সময় সংবাদমাধ্যমের ওপর এক হাত নেন পোপ। তিনি কিছু কিছু সংবাদমাধ্যমের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার সমালোচনা করে বলেন, মিডিয়া এই ব্যাপারটিকে অতিরঞ্জিত করে ভ্যাটিকানের ভাবমূর্তির ওপর মিথ্যা কলঙ্ক আরোপের চেষ্টা করছে।

এ সময় পোপ বলেন,‘সাম্প্রতিক দিনগুলোতে আমার সহকারীদের কারণে আমার মনে গভীর দু:খের সঞ্চার হয়েছে।’ তবে তিনি যোগ করেন,‘আমি আবারও আমার সহযোগীদের প্রতি আমার বিশ্বাসকে পুন:স্থাপন করতে চাই। এই বিশ্বস্ত সহযোগীরা বিশ্বাস ও ত্যাগের মনোভাব নিয়ে প্রশাসন চালাতে আমাকে এতদিন ধরে নীরবেই সাহায্য করে গেছে।’

তথ্য ফাঁস হওয়ার ঘটনায় পোপের একান্ত সহকারী পাওলো গাব্রিয়েলের গ্রেফতার নিয়ে ব্যাপক মাতামাতি ঘটে ইতালির পত্র পত্রিকা ও গণমাধ্যমে। গত সপ্তাহে ভ্যাটিকানে অবস্থিত তার বাড়ি থেকে বেশ কিছু গোপন নথিপত্র উদ্ধার করা হয়। তাকে বর্তমানে ভ্যাটিকানে আটকে রাখা হয়েছে। তবে তিনি এ ব্যাপারে চলমান তদন্তে পুরোপুরি সহযোগিতা করার অঙ্গীকার করেছেন।

কিন্তু ইতালির খুব অল্প মানুষই বিশ্বাস করে যে এ কাজ গ্যাব্রিয়েল একাই করেছে। পাশাপাশি তদন্তে সহযোগিতা করার তার দেওয়া আশ্বাস এ সন্দেহের মূলে আরো রসদ জোগায় যে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরো কারও না কারও গ্রেফতার আসন্ন।

তবে এই তথ্য ফাঁসের প্রাথমিক উদ্দেশ্য বা মোটিভ সম্পর্কে এখনও স্পষ্ট কোনো ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। কোনো কোনো বিশ্লেষকদের মতে এই ফাঁসের উদ্দেশ্য বেনেডিক্টের পরপরই ভ্যাটিকানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তি কার্ডিনাল তারিসিসিও বারটেনোকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। আবার অনেকে বলছেন  এই ফাঁসের উদ্দেশ্য অর্থনৈতিক ভাবে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার ভ্যাটিকানের অঙ্গীকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। তবে চূড়ান্তভাবে অনেকেই মনে করছেন, এই তথ্য ফাঁেসর উদ্দেশ্য ভ্যাটিকানের প্রশাসন পরিচালনা করতে ৮৫ বছর বয়সী পোপ অক্ষম হয়ে পড়েছেন তা প্রমাণ করা।

আন্তর্জাতিক