দীর্ঘ ২৪ বছরেরও বেশি সময় পর দেশের বাইরে পা রাখলেন মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি। গত মঙ্গলবার থাইল্যান্ড পৌঁছেছেন তিনি।
থাইল্যান্ড পৌঁছেই সেখানে বসবাসরত মিয়ানমারের অভিবাসী শ্রমিকদের আশার বাণী শোনালেন অং সান সু চি। দেড় লক্ষাধিক অভিবাসীকে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি। ১৯৮৮ সালের পর মিয়ানমারের বাইরে এই প্রথম কোনো দেশ সফরে থাইল্যান্ড গেলেন গণতন্ত্রপন্থি নোবেল জয়ী রাজনীতিবিদ অং সান সু চি।
গত মঙ্গলবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের দক্ষিণে মাহাচাই নামক স্থানে পৌঁছালে সেখানে বসবাসরত বার্মিজ অভিবাসীরা উল্লাসের সঙ্গে সু চিকে অভ্যর্থনা জানায়। ‘আমরা বাড়ি ফিরতে চাই’ লেখা পোস্টার বহন করছিল বৈধ-অবৈধভাবে থাইল্যান্ডে বসবাসরত এসব মানুষ।
নিজ দেশে সামরিক জান্তা সরকারের নিপীড়নের শিকার এক লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ থাইল্যান্ডের শরণার্থী শিবিরে মানবেতন জীবন যাপন করছে। বেশিরভাগই থাইল্যান্ডে বৈধ ও অবৈধভাবে অবকাঠামো নির্মাণ, শিল্পকারখানা এবং মৎস শিল্পে কাজ করে।
মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী সু চি দীর্ঘ ২৪ বছর পর দেশের বাইরে পা রাখলেন। প্রথমেই তিনি থাইল্যান্ডে সফরের সিদ্ধান্ত নেন।
এখানে তিনি আগামী শুক্রবার অনুষ্ঠেয় বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে বক্তৃতা দেবেন। থাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও তার সাক্ষাতের কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে থাইল্যান্ডের সংবাদ মাধ্যম।
থাইল্যান্ড সফর শেষে সু চি দেশে ফিরবেন। এরপর ইউরোপ সফরে বের হবেন তিনি। এ সফরেই আনুষ্ঠানিকভাবে নোবেল পুরস্কার গ্রহণের উদ্দেশ্যে নরওয়ে যাবেন এবং সে সঙ্গে যুক্তরাজ্যে বসবাসরতি পরিবারের সঙ্গেও বহুদিন পর সাক্ষাত করবেন সু চি।
এছাড়া, ২১ জুন ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বক্তৃতা করার জন্য আমন্ত্রিত হয়েছেন সু চি। তিনি জেনেভা, প্যারিস এবং আইয়ারল্যান্ডও সফর করবেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালে অং সান সু চি শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন। কিন্তু সে সময় মিয়ানমারের সামরিক শাসক একবার দেশের বাইরে গেলে আর দেশে ফিরতে দেবে না এ আশঙ্কায় পুরস্কার গ্রহণ করতে নরওয়ে যাননি সু চি।
চলতি বছরে মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসার পর সু চি বিভিন্ন দেশ সফর করার সিদ্ধান্ত নেন।