ভারত-পাকিস্তান পরমাণু যুদ্ধ হলে ১০ কোটির বেশি মানুষ মারা যাবে

ভারত-পাকিস্তান পরমাণু যুদ্ধ হলে ১০ কোটির বেশি মানুষ মারা যাবে

আরো পাঁচ থেকে ছয় বছর পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ হলে ১০ কোটির বেশি মানুষ মারা যাবে। পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের ফলে তৈরি হওয়া ঘন মেঘ ফুঁড়ে সূর্যের আলো পৌঁছাতে পারবে না। সে কারণে শস্যও ফলবে না বলে বিশ্বজুড়ে গণঅনাহারে মৃত্যু হবে কোটি কোটি মানুষের।

আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। ওই গবেষণার অন্যতম গবেষক, নিউ ব্রান্সউইকের অ্যালান রোবক এ ব্যাপারে বলেন, ২০২৫ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ শুরু হলে ক্ষয়ক্ষতি শুধুই যে এলাকায় বোমা পড়ল, সেখানেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। ওই পরমাণু যুদ্ধের খেসারত দিতে হবে সারাবিশ্বকে।

গবেষণায় আরো উঠে এসেছে, দশকের পর দশক ধরে কাশ্মীর ইস্যুতে যতই যুদ্ধ করুক ভারত ও পাকিস্তান, দুই পক্ষের যতই গোলাবারুদ বিনিময় হোক না কেন, বছর ছয়েক পর দুই দেশের হাতে চারশ থেকে পাঁচ শতাধিক পরমাণু বোমা থাকবে না।

সে কারণে গবেষকরা বলছেন, দুই পক্ষের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ হলে, বোমা বিস্ফোরণের ফলে ঝুল আর কালিতে ঢেকে যাবে আকাশ। পরমাণু বোমা বিস্ফোরণের ফলে এক কোটি ৬০ লাখ থেকে তিন কোটি ৬০ লাখ টন ওজনের ঝুল, কালিতে ঢেকে যাবে আকাশ।

যা বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরে পৌঁছাতে সময় নেবে বড়জোর কয়েক সপ্তাহ। ফলে, সারাবিশ্বের বিশাল একটি অংশে সূর্যের আলো পৌঁছাবে না। কারণ, ওই ঝুল, কালির পুরু স্তর সূর্যের আলোর পুরোটাই শুষে নেবে। ফলে, জমাট কালো মেঘের পরিমাণ বাড়বে দ্রুত।

গবেষণায় উঠে এসেছে, এসবের ফলে সূর্যালোকের ২০ থেকে ৩৫ শতাংশ আলো কম পৌঁছাবে পৃথিবীতে। যার জেরে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা কমে যাবে দুই থেকে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টিপাতের পরিমাণও কমে যাবে অন্তত ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ।

আর এসবের প্রভাব পড়বে ফসল উৎপাদনের ওপর। মহাসাগরে যে গাছপালা জন্মায়, তাদের উপরেও। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ হলে জমির উপর যে ফসল ফলে, তার পরিমাণ কমে যাবে ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ। আর মহাসাগরগুলোতে জন্মানো উদ্ভিদের উৎপাদন কমবে পাঁচ থেকে ১৫ শতাংশ।

সেই যুদ্ধে পরমাণু বোমা বিস্ফোরণের ফলে বায়ুমণ্ডলে যে ঝুল ও কালির মেঘ জমবে, তা কেটে যেতে সময় লাগবে অন্তত ১০ বছর। সময়টা আরা বেশি লাগতে পারে, সেই মেঘ বায়ুমণ্ডলের আরো উপরের স্তরে উঠে যেতে।

কতটা শক্তির পরমাণু বোমা সেই যুদ্ধে ব্যবহৃত হতে পারে, তারও একটা হিসাব দিয়েছেন গবেষকরা। তারা বলছেন, ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিরোশিমায় আমেরিকার ফেলা পরমাণু বোমার শক্তি যতটা ছিল, সেই ১৫ কিলোটন ওজনের বোমা ফেলতে পারে দুই পক্ষই। আবার সেই পরমাণু বোমার ওজন হতে পারে কয়েকশ কিলোটনও।

আন্তর্জাতিক শীর্ষ খবর