অনলাইনে অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসার মূলহোতা সেলিম প্রধানের বাসায় অভিযান চালিয়ে ৭ লাখ টাকা, ২৩ দেশের ৭৭ লাখ টাকা সমমূল্যের মুদ্রা, ৮ কোটি টাকার চেক ও হরিণের দুইটি চামড়া জব্দ করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
ক্যাসিনো থেকে আয়ের অবৈধ টাকা তিনটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে জমা করা হতো। এরপর সেসব টাকা হুন্ডি বা সঙ্গে করে বিদেশে পাচার করে আসছিলেন তিনি। এমনকি সেসব টাকা লন্ডনেও পাচারের তথ্য পেয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
আজ মঙ্গলবার সেলিম প্রধানের বাসা ও অফিসে অভিযান শেষে এসব কথা জানান র্যাব ১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম।
তিনি বলেন, অনলাইনে ক্যাসিনো খেলতে হলে গ্রাহকের নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার প্রয়োজন হয়। সেসব টাকা তিনটি গেটওয়েতে জমা হতো। খেলায় জিতলে টাকা গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ফেরত যেত, অন্যথায় টাকাগুলো গেটওয়েতে থেকে যেত।
তিনি আরো বলেন, সেলিম প্রধানের সহকারী মো. আক্তারুজ্জামান প্রতি সপ্তাহে সেসব গেটওয়ের টাকা তুলে সেলন, যমুনা ও কমার্শিয়াল তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করতেন। এরপর সেসব টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বা ব্যক্তির সঙ্গে করে বিদেশে চলে যেত।
এর আগে সোমবার রাতে গুলশান-২ এর ১১/এ রোডে সেলিম প্রধানের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মদ, নগদ টাকা ও বিদেশি মুদ্রা জব্দ করেছে র্যাব। তার আগে সোমবার দুপুরে থাই এয়ারওয়েজের টিজি-৩২২ নম্বর ফ্লাইট ছাড়ার আগমুহূর্তে সেলিম প্রধানকে আটক করা হয়।
সেলিম প্রধান অনলাইনে ক্যাসিনো পরিচালনাকারী এবং বাংলাদেশের কান্ট্রি প্রধান। তিনি ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সহসভাপতি। এ ছাড়া এর আগে গ্রেপ্তার হওয়া বিসিবি পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার ক্যাশিয়ারও।
সেলিম প্রধানের ব্যাংককের পাতায়ায় বিলাসবহুল হোটেল, ডিসকো বারসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, শুধু অনলাইন ক্যাসিনো পরিচালনাই নয়, সেলিম প্রধান রাজশাহীসহ সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় গবাদিপশুর সব খাটাল ও মাদক সিন্ডিকেটের হোতা। এমনকি সীমান্তে জালটাকার মূল সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণও তার হাতে।
প্রশাসনের বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে তিনি খাটাল, মাদক ও জালটাকার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন। সেখান থেকে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা চাঁদা নেন। দুই বছরে তিনি সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায় দুই কোটি টাকা চাঁদা নিয়েছেন।