বিশ্বব্যাপী উদ্ভাবন আর প্রযুক্তিগত উৎকর্ষে এ খাতের কম্পানিগুলোরও সম্পদ বাড়ছে দ্রুত। ফলে ট্রিলিয়নেয়ার হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন প্রযুক্তি ব্যবসায়ীরাই। কমপারিসানের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, যে হারে সম্পদ বাড়ছে তাতে করে আগামী ২০২৬ সাল নাগাদ বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়নেয়ার হিসেবে নাম লেখাতে পারেন অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও জেফ বেজস। এক ট্রিলিয়ন ডলার মানে এক লাখ কোটি ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় ৮৫ লাখ কোটি টাকা।
ফোর্বস ম্যাগাজিনের এ বছরের বিলিয়নেয়ারের তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছেন এই ই-কমার্স ধনকুবের। বছরের শুরুতে তাঁর সম্পদের পরিমাণ ছিল ১৩১ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু স্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘ ২৫ বছরের দাম্পত্য জীবনের অবসান ঘটায় গত জুলাইয়ে মীমাংসা বাবদ স্ত্রীকে দিয়ে দিতে হয় ৩৮ বিলিয়ন ডলার। ফোর্বস ম্যাগাজিন বলছে, এর পরও ব্যাবসায়িক উন্নতি অব্যাহত থাকায় সর্বশেষ হিসাবে বেজসের সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১০৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার।
ব্যবসা ও কমিউনিটি প্ল্যাটফর্ম কমপারিসান তাদের গবেষনায় জানায়, বিশ্বে বেজসই প্রথম ১০০ বিলিয়ন ডলারের মালিক হয়েছেন। গত পাঁচ বছরে তাঁর সম্পদ বেড়েছে গড়ে ৩৪ শতাংশ হারে। এ বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামী ২০২৬ সাল নাগাদ তিনি হবেন বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়ন ডলারের মালিক। তখন তাঁর বয়স হবে ৬২ বছর। গবেষণায় উঠে আসা ২৫ বিলিয়নেয়ারের মধ্যে মাত্র ১১ জনের তাঁদের জীবদ্দশায় ট্রিলিয়ন ডলারের মালিক হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এর মধ্যে বেজসের পরের অবস্থানে রয়েছেন চীনা ব্যবসায়ী ঝু জিয়াইন। তিনি রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার এভারগ্রেন্ডে গ্রুপের চেয়ারম্যান। বর্তমান হারে সম্পদ বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে তিনি ৬৮ বছর বয়সে ২০২৭ সাল নাগাদ ট্রিলিয়নেয়ার হতে পারেন। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা। তিনি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান পদ থেকে সম্প্রতি অবসর নিয়েছেন। ২০৩০ সাল নাগাদ জ্যাক মা ট্রিলিয়ন ডলারের মালিক হতে পারেন। চতুর্থ সম্ভাবনাময় ধনকুবের মার্ক জাকারবার্গ, তিনি মাত্র ৫১ বছর বয়সে ২০৩৬ সাল নাগাদ বিশ্বের সবচেয়ে জুনিয়র ট্রিলিয়নেয়ার হতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে একটি গাড়ির গ্যারেজে ১৯৯৪ সালে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন প্রতিষ্ঠা করেন জেফ বেজস। সেটি এখন রাজস্বের দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় খুচরা কম্পানি। ব্যবসা বিস্তৃত হয়েছে অডিও, ভিডিও, সফটওয়্যার, ইলেকট্রনিকস থেকে বিচিত্র সব পণ্যে। বাজার ছড়িয়েছে পুরো বিশ্বে। এ ছাড়া বেজস গড়ে তোলেন মহাকাশবিষয়ক কম্পানি অ্যারোস্পেস। কিনেছেন ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা। আরো বেশ কিছু ব্যবসা-বাণিজ্যে তাঁর অংশীদারি রয়েছে।
অ্যামাজনের সাফল্য নিয়ে জেফ বেজস বলেন, ‘আমি উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য অনেক বড় লাভজনক চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। ওয়াল স্ট্রিটে একটি ফিন্যান্স সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চাকরি ছেড়ে দিয়ে ইন্টারনেটভিত্তিক বইয়ের দোকান দিই; যেটি এখন অ্যামাজনে পরিণত হয়েছে। আমি জানতাম, যখন আমার বয়স ৮০ হবে তখন আজকের কাজের জন্য আমাকে দুঃখ করতে হবে না।’ ন্যাশনাল, ফোর্বস ম্যাগাজিন, মেইল অনলাইন।