ধর্মের নামে আর পশু বলি দেওয়া যাবে না। হিন্দু ধর্মের কোথাও লেখা নেই, পশু বলি না দেওয়া হলে ধর্ম পালন করা যাবে না। জানা গেছে, এই যুক্তি দেখিয়ে ত্রিপুরায় ধর্মের নামে পশুবলির ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে হাইকোর্ট।
সে রাজ্যের কোনো মন্দিরে আর বলি দেওয়া যাবে না। এমনকি রাজ্য সরকার চাইলেও বলি দিতে পারবে না। ত্রিপুরা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এ নির্দেশনা দিয়েছে।
প্রধান বিচারপতি সঞ্জয় কারোল এবং বিচারপতি অরিন্দম লোধের ডিভিশন বেঞ্চ গতকাল শুক্রবার এই রায় দিয়েছে। রায়ে বলা হয়েছে, পশুপাখিদেরও বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার আছে। ত্রিপুরার কোনো মন্দিরের ত্রিসীমানায় আর পশুবলি দেওয়া যাবে না। পশুবলির অনুমতি দিতে পারবে না রাজ্য সরকার। এমনকি, সরকার নিজস্ব উদ্যোগেও আর বলি দিতে পারবে না।
এই নির্দেশ অবিলম্বে কার্যকর করার জন্য প্রতিটি জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। ত্রিপুরার বেশ কিছু মন্দিরে অসংখ্য পশু বলি দেওয়া হয়। অধিকাংশ বলির খরচ সরকার জোগায়।
জানা গেছে, সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ত্রিপুরেশ্বরী এবং চতুরদাস দেবতা মন্দিরে সিসিটিভি বসানোর নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মুখ্যসচিবকে প্রতি মাসের রেকর্ডিংয়ের তথ্য সংগ্রহ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, জনস্বার্থে করা একটি মামলার ভিত্তিতে ওই রায় দিয়েছে আদালত। মামলাটি করেছিলেন রাজ্যের অবসরপ্রাপ্ত জেলা দায়রা জজ সুভাষ ভট্টাচার্য। তিন দিন ধরে সেই মামলার শুনানি চলে ডিভিশন বেঞ্চে।
যদিও রাজ্যের পক্ষ থেকে বলি বন্ধের বিরোধীতা করা হয়। রাজ্য সরকারের আইনজীবী যুক্তি দেন, শত শত বছর ধরে এই প্রথা চলে আসছে। ১৯৪৯ সালে ত্রিপুরা যখন ভারতের অংশ হয়, তখনই সকল মন্দিরের বলির খরচ সরকারের পক্ষ থেকে বহন করার চুক্তি হয়।
সুভাষ পাল্টা যুক্তি দেন, বেদ বা উপনিষদে কোথাও লেখা নেই, বলি না হলে হিন্দু ধর্ম পালনে ক্ষতি হবে। সেই যুক্তি মেনে নেয় আদালত।