বরগুনার আলোচিত রিফাত হত্যার সাক্ষি ও মামলার সাত নম্বর আসামি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি এখন ঢাকায়। চিকিৎসা ও আইনি সহায়তার কাজে গত রবিবার বাবা মোজাম্মেলের সাথে তিনি ঢাকা আসেন।
বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর জানান, এর মধ্যে আইনজীবী জেড আই খানের সঙ্গে দেখাও করেন মিন্নি ও তার বাবা।এরপর মঙ্গলবার তারা যান রাজধানীর গুলিস্তানে কেনাকাটা করতে। সেখানে মিন্নিকে দেখে চিনতে পারে লোকজন। ভিড় জমে যায়। দোকানদাররা কেনাকাটাতে ছাড় দিয়েছে বলে কিশোর জানান।
মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, কিছুদিন আগেও মানুষজন আমাদের দিকে, আমার মেয়ে মিন্নির দিকে কেমন কেমন করে করে তাকাতো। লজ্জায় বের হতে পারতাম না কিন্তু এখন লোকজন দেখলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে। তিনি বলেন, ‘মিন্নির জামিন হওয়ার পর একদম পাল্টে গেছে পরিস্থিতি।
মিন্নিকে নিয়ে মঙ্গলবার রাজধানীর গুলিস্তানে কেনাকাটা করতে গিয়ে সংবাদমাধ্যমকে মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, মিন্নিকে দেখে মানুষের উচ্ছ্বাসের শেষ নেই। পুরো মার্কেটের মানুষ একত্র হয়ে গিয়েছিল। মেয়েকে জামা-কাপড় কিনে দিলাম। দোকানিও খাওয়াতে চেয়েছে। দামে ডিসকাউন্ট দিয়েছে।
মিন্নির বাবা বলেন, মানুষ শুধু জড়োই হয় না। ছবি তুলবেই তুলবে। ছবি তোলার জন্য ভিড় সামলানো যায় না। মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, এটা মানুষের সম্মান। এই সম্মানের মর্যাদা যেন তারা রাখতে পারেন।
গত ২৯ আগস্ট জামিনে মুক্তির পর বেশ অসুস্থ ছিলেন মিন্নি। চলতি মাসের শুরুতে মিন্নির শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে তার স্বজনরা বলেছিলেন, সদা হাস্যোজ্জ্বল, চঞ্চল ও স্বজনদের সঙ্গে সদালাপী ছিলেন মিন্নি। কিন্তু জামিনে মুক্তির পর অনেক স্বজনের মাঝেও একাকিত্বে ভুগছেন সেই মিন্নি। শারীরিকভাবে অসুস্থ মিন্নি এখন স্বামী রিফাত শরীফের স্মৃতিতে কাতর। একরাশ বিষণ্নতা নিয়ে নীরব দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন তিনি। এ নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন তার বাবা-মা।
মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেছিলেন, দুই হাঁটুতে কালো দাগ রয়েছে মিন্নির। হাঁটুর ব্যথায় হাঁটতে পারে না সে। চঞ্চল ও সদালাপী মিন্নি এখন কারও সঙ্গে কথা বলে না। খেতে চায় না কিছুই। একাকী কাঁদে। রিফাতের স্মৃতি মিন্নিকে আপ্লুত করে তুলছে। ঘুমের মধ্যেও চিৎকার করে কেঁদে ওঠে মিন্নি।
প্রসঙ্গত, বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে দুই শর্তে জামিন মঞ্জুর করে রায় দেন হাইকোর্ট। যে দুই শর্তে মিন্নিকে জামিন দেওয়া হয়েছে তা হলো, মিন্নি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না এবং তাকে তার বাবার জিম্মায় থাকতে হবে।
২৯ আগস্ট হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। জামিনে থাকা অবস্থায় মিন্নি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললে তার জামিন বাতিল হবে বলেও আদেশে উল্লেখ করেন আদালত।
‘সালমানের মাথায় রুমাল বেঁধে দিলাম, সেই স্টাইল সারাদেশে ছড়িয়ে গেল’