অচিরেই মন্ত্রিসভায় আরো তিন মন্ত্রী যোগ হচ্ছেন। একই সঙ্গে কয়েকজন মন্ত্রীর দপ্তর পরিবর্তনেরও খবর দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকারের একাধিক সূত্র।
আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের আগেই মন্ত্রিসভায় এ পরিবর্তন আসতে পারে বলেও জোর দাবি ওইসব সূত্রের।
মন্ত্রিসভার চতুর্থ বারের এই সম্প্রসারণে নতুন মন্ত্রীর তালিকায় দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীরের নাম শোনা যাচ্ছে।
আগামী ৫ জানুয়ারি বর্তমান সরকারের ৩ বছর পূর্ণ হচ্ছে। চতুর্থ বছরে পদাপর্ণের আগেই মন্ত্রিসভায় আরো পরিবর্তন আসতে পারে, এমনকি দায়িত্ব পাল্টাতে পারে একাধিক দপ্তরেও।
পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেতে পারেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপটেন (অব.) তাজুল ইসলাম ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক।
আবার দলে অপেক্ষাকৃত জুনিয়র বা তরুণ নেতাদের মধ্য থেকেও দুই একজনকে মন্ত্রী সভায় আনা হতে পারে।
পরিবর্তন হতে পারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আফম রুহুল হক, ভুমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হিরা, পরাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকারসহ কোনো কোনো মন্ত্রির দপ্তরও।
তবে রদবদল ও সম্প্রসারণ হলেও এই মুহূর্তে মন্ত্রিসভা থেকে কারো বাদ পড়ার সম্ভাবনা নেই। প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই মন্ত্রিসভা থেকে কাউকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছেন।
গত শনিবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিন বছরে এমন কোনো অপরাধ পাইনি যে কাউকে বাদ দিতে হবে। বাদ দেবো কেন, বাদ দেওয়ার মতো এমন কোনো অভিযোগ কেউ দিতে পারেনি।’
আওয়ামী লীগের নেতুত্বাধীন মহাজোটের এ মন্ত্রিসভা গঠন হয় ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি। প্রথমে প্রধানমন্ত্রীসহ ৩২ সদস্যের মন্ত্রিপরিষদ শপথ নেয়। এর ১৮ দিন পর মন্ত্রিপরিষদ সম্প্রসারণ করা হয়।
এর পর সরকারের ৬ মাসের মাথায় আরেকবার মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ হয়। দ্বিতীয় দফায় সম্প্রসারণের পর মন্ত্রি পরিষদের সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৪এ। তৃতীয় দফায় সম্প্রসারণের পর এই সংখ্যা ৪৬ এ দাঁড়িয়েছে।
প্রথমে ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী, ২৩ জন মন্ত্রী ও ৮ জন প্রতিমন্ত্রী শপথ নেন। এর পর ২৪ জানুয়ারি ৬ জন প্রতিমন্ত্রী শপথ নেন। এর পর দ্বিতীয় দফায় সম্প্রসারণে ১ জন মন্ত্রী ও ৫ জন প্রতিমন্ত্রীকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গত ২৮ নভেম্বর তৃতীয় দফায় আরো ২ জন মন্ত্রী অন্তর্ভুক্ত হন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ জল্পনা-কল্পনার পর গত ২৮ নভেম্বর মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভা তৃতীয় দফায় সম্প্রসারণ করা হয়। আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও সভাপতিম-লীর সদস্য ওবায়দুল কাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এছাড়া বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান।
এছাড়া রদবদল করে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে সৈয়দ আবুল হোসেনকে তথ্য যোগাযোগ, কর্নেল (অব.) ফারুক খানকে বাণিজ্য থেকে সরিয়ে বেসরকারি বিমান পরিবহন, এই মন্ত্রণালয় থেকে জিএম কাদেরকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
নতুন দুই মন্ত্রি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত রেল ও ওবায়দুল কাদের যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।
বঙ্গভবনে নতুন মন্ত্রীদের শপথ অনুষ্ঠানের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় আরো চমক আসতে পারে বলে ইঙ্গিতও দেন।
এছাড়া গত ৫ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমার ও ইন্দোনেশিয়া সফরে যাওয়ার আগে নতুন মন্ত্রি ও দলের নেতাদের সঙ্গে আলাপাকালেও এ ধরণের ইঙ্গিত দেন বলে জানায় দলীয় সূত্র।