কসবার বিনাউটি ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারী

কসবার বিনাউটি ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারী

ব্রা‏হ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ইকবাল হোসেনকে তাঁর পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। রোহিঙ্গা নাগরিককে জন্ম নিবন্ধন সনদ দেয়ার অভিযোগ এনে গত রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একই সাথে ওই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোহাম্মদ শরীফুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ব্রা‏হ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইকবাল হোসেন এর বিরুদ্ধে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ৯ ও ১০ ধারার জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র প্রদানের সুষ্ঠ ভাবে দায়িত্ব পালন করেননি।
এতে বলা হয়েছে, কক্সবাজারের টেকনাল উপজেলাধীন রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দাদের জন্মসনদ প্রদান করে সরকারি আদেশ অমান্য করার বিষয়টি তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। এতে করে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইকবাল হোসেন অপরাধমুলক কার্যক্রম পরিষদসহ জনস্বার্থের পরিপন্থি বিবেচনায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪(১) ধারা অনুযায়ী ওই চেয়ারম্যানকে তার স্বীয় পদ হইতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
একই সাথে ওই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. শরীফুল ইসলামকে একই কর্মকান্ডের সাথে জড়িত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ওই উপসচিব মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী স্বাক্ষর করে ব্রা‏হ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসককে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেছেন।
ব্রা‏হ্মণবাড়িয়া পার্সপোট কার্যালয় ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের টেকনাফের কুতুফালংয়ের রোহিঙ্গা শিবিরেরর ই ব্লকের বাসিন্দা মরিজান (১৭) বসবাস করতেন। তাঁর বাড়ি মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে। গত ১ আগস্ট ওই তরুনী তানজিনা আক্তার নাম দিয়ে কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের নেমতাবাদ গ্রামের মোখলেছুর রহমান (৫০) ও আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের গিরিশগন গ্রামের লিপি বেগম (৩৮) বাবা-মা সেজে ব্রা‏‏হ্মণবাড়িয়া পাসপোর্ট কার্যালয়ে পাসপোর্ট করতে যায়। তাদের কথাবার্তা সন্দেহ হলে রোহিঙ্গা নাগরিকসহ তিনজনকেই আটক করে পুলিশে সোর্পদ করা হয়।
এ সময় ওই রোহিঙ্গা নাগরিকের কাছে বাংলাদেশী একটি জন্ম নিবন্ধন সনদপাওয়া যায়। এটি কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইকবাল হোসেনের স্বাক্ষরিত। ওই সনদপত্রে তার তার নাম মারজানা নয়। সেটিতে লেখা আছে মোছা. তানজিনা আক্তার। বাবার নাম মো. মোছলেছ। মোখলেছের তানজিনা নামের একটি মেয়ে আছে। ওই মেয়ের নামে পাসপোট করতে রোহিঙ্গা নাগরিককে পাসপোর্ট করতে সহায়তা করেন মোখলেছুর রহমান।
বরখাস্ত হওয়া বিনাউটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইকবাল হোসেন বলেন, তিনি কোন রোহিঙ্গা নাগরিককে জন্ম নিবন্ধনের সনদ প্রদান করেননি। নেমতাবাদ গ্রামের মোখলেছ মুন্সী তার মেয়ে তানজিনা আক্তারের জন্মবিন্ধন সনদ নিয়েছে। সেই নিবন্ধন নিয়ে রোহিঙ্গা নাগরিক পাসপোর্ট করতে গেলে তা ধরা পড়ে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কোন তদন্ত করেননি তদন্ত ছাড়াই প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। সঠিক ভাবে তদন্ত করা হলে তিনি নিদোর্ষ প্রমাণিত হবেন।

জেলা সংবাদ শীর্ষ খবর