আগামী ২০২০ সালে যুক্তরাষ্টের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী হতে দলটির তৃতীয় বিতর্কে অংশ নিয়েছেন দলটির সামনের সারির নেতা জো বাইডেন, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এলিজাবেথ ওয়ারেন এবং বার্নি স্যান্ডার্স।
টেক্সাসের হিউস্টনে স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে এই বিতর্কে প্রথমবারের মতো তিনজন প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন প্রত্যাশী একসঙ্গে মঞ্চে এলেন।
মি. বাইডেন, মি. স্যান্ডার্সের সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা পরিকল্পনা, “মেডিকেয়ার ফর অল” এর সম্ভাব্যতার উপর আক্রমণ করেন। তবে মিজ. ওয়ারেন এবং মি. স্যান্ডার্স এই ব্যবস্থাটির পক্ষে ছিলেন।
ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কুড়িজন মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে কেবল সর্বোচ্চ ভোট অর্জনকারী ১০ ডেমোক্র্যাট এই মনোনয়নের মাঠে লড়বেন।
আগামী বছর নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে আগামী জুলাই মাসে দলীয় সম্মেলনে চূড়ান্তভাবে ডেমোক্র্যাটিক হোয়াইট হাউসের মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে।
আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, অভিবাসন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং শুল্ক নিয়েও বিতর্ক হয়েছে – তবে স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে সবচেয়ে বড় বাক-বিতণ্ডা হয়।
স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে বিতর্ক
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে কীভাবে সংস্কার করা যায় সে বিষয়টি মধ্যপন্থী এবং আরও প্রগতিশীল ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে মতবিরোধের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মি. স্যান্ডার্স এবং মিজ. ওয়ারেন দুজনই ‘মেডিকেয়ার ফর অল (সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা)’কে সমর্থন দিচ্ছেন, যেটা বয়স্কদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিদ্যমান কেন্দ্রীয় কর্মসূচিকে আরও প্রসারিত করবে। যেখানে ‘সিঙ্গেল পেয়ার বীমা’ ব্যবস্থার মধ্যেই সব আমেরিকানদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হবে।
মি. স্যান্ডার্সের এই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন অত্যন্ত ব্যয়বহুল বলে সমালোচনা করেছেন মি. বাইডেন।
এর পরিবর্তে তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সাশ্রয়ী সেবা প্রকল্প ‘অ্যাফর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট’ বিকাশের দিকে মনোনিবেশ করা উচিত বলে জানিয়েছেন।
“আমি জানি সিনেটর [ওয়ারেন] বলেছেন যে তিনি বার্নির পক্ষে আছেন। ঠিক আছে, আমি বারাকের পক্ষে আছি। আমি মনে করি ওবামাকেয়ার কাজ করেছে,” মিস্টার বাইডেন বিতর্কের মঞ্চে বলেন।
“আমার পরিকল্পনার পেছনে প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়… তবে এটির জন্য তিন লাখ কোটি ডলারের বেশি খরচ হবে না।”
মিজ ওয়ারেন, স্যান্ডার্সের নীতির পক্ষ সমর্থন করে বলেন, পরিবারগুলোকে এখন অতিরিক্ত স্বাস্থ্যসেবা বিল দিতে হয়, এবং কেবল ধনী ব্যক্তি এবং কর্পোরেশন এই পরিকল্পনা থেকে লাভবান হচ্ছে।
নিচের সারির কয়েকজন প্রার্থী মি. স্যান্ডার্স এবং মিজ. ওয়ারেনকে আক্রমণ করেন।
সিনেটর অ্যামি ক্লাবুচার মেডিকেয়ার ফর অল-প্রসঙ্গে বলেন: “আমি একে সাহসী ধারণা বলে মনে করি না। এটি একটি খারাপ আইডিয়া।”
আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিতর্ক
সাবেক কংগ্রেসম্যান বেটো ও’রউরকে, যার জন্মস্থান এল পাসোতে, যেখানে কিনা এলোপাতারি বন্দুক হামলার ঘটনায় ২০জন নিহত হয়েছিল। তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে তিনি অ্যাসল্ট রাইফেল বাজেয়াপ্ত করাকে সমর্থন করেন কি-না।
“অবশ্যই। আমরা আপনাদের কাছে থাকা এআর-১৫, একে-৪৭ নিতে যাচ্ছি,” এরপর মি. ও’রউরকে সবাইকে তালি দিতে বলেন, “আমরা আমেরিকানদের বিরুদ্ধে আর এ ধরণের অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেব না।”
আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিতর্কের এক পর্যায়ে সিনেটর কামালা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “স্পষ্টতই তিনি বন্দুকের ট্রিগার টেনে ধরেননি, তবে তিনি অবশ্যই টুইটের মাধ্যমে গোলা ছুড়ে চলছেন।”
উদ্বোধনী বক্তব্যে বেশিরভাগ প্রার্থী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আক্রমণ করেছেন এবং তাকে ‘বিভাজনকারী নেতা’ বলে অভিযুক্ত করার পাশাপাশি তাকে বর্ণবাদীর অভিযোগেও অভিযুক্ত করেছেন।
মঞ্চে কারা ছিলেন?
মিনেসোটার সিনেটর অ্যামি ক্লুবুচার
নিউ জার্সির সিনেটর কোরি বুকার
সাউথ বেন্ড, ইন্ডিয়ানার মেয়র পিট বাটিগিগ
ভারমন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স
প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন
ম্যাসাচুসেটসের সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন
ক্যালিফোর্নিয়ার সিনেটর কামালা হ্যারিস
উদ্যোক্তা অ্যান্ড্রু ইয়াং
টেক্সাসের সাবেক কংগ্রেসম্যান বিটো ও’রউর্ক
ওবামার প্রাক্তন আবাসন সচিব জুলিয়ান কাস্ত্রো