আজ ১০ সেপ্টেম্বর কানাডার ম্যানিটোবার প্রাদেশিক সংসদের নির্বাচন। এই নির্বাচেনে এনডিপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুরদানা ইসলাম। সিয়াইন রিভার নামের যে রাইডিং থেকে দুরদানা প্রার্থী হয়েছেন- সেখানে মাত্র ১৮ শতাংশ অভিবাসী। আর ৯০ শতাংশের বেশি বাসিন্দাই স্থানীয়।
যাতে সহজেই অনুমেয় যে, রাইডিংটি আসলে অর্থিকভাবে স্বচ্ছল মানুষদের এলাকা। এমনই একটা এলাকা থেকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুরদানা ইসলামকে প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছে এনডিপি।
সিয়াইন রিভার রাইডিং-এ দুরদানার প্রতিদ্বন্দ্বীরা হলেন- গ্রিন পার্টির ব্রায়ান ল্যামোরিক্স, লিবারেল পার্টির জেমস ব্লুমফিল্ড এবং পিসি পার্টির জেনিস মোরলি-লেকোমটে।
এ নির্বাচনে বিজয়ী হলে বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য নতুন একটি ইতিহাস রচনা করবেন দুরদানা। তবে সেটা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে দিনের শেষ পর্যন্ত।
তবে ওই নির্বাচনী এলাকায় এনডিপির প্রার্থী টানা বিজয়ী হওয়ার রেকর্ড রয়েছে। যদিও গতবার কনজারভেটিভ পার্টি সেটি ছিনিয়ে নিয়েছে।
দুরদানা বর্তমান এমএনএ’র সঙ্গেই ভোটের লড়াই করছেন। সামগ্রিক বিবেচনায় দুরদানা এই আসনে শক্তিশালী এবং সম্ভাবনাময় প্রার্থী।
বাংলাদেশী ডলি বেগমের পর দুরদানা ইসলামের প্রার্থীতা ওখানকার বাংলাদেশীদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করেছে। তারা সব সময়ই মূলধারার রাজনীতিতে বাংলাদেশিদের সম্পৃক্ত হবার, ভোটের লড়াইয়ে প্রার্থী হবার জন্য অনুপ্রাণিত করেন।
তবে কেবল ভোটে দাড়িয়ে যাওয়াই মূলধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়া নয়। অন্যান্য প্রার্থীর সঙ্গে লড়াই করার জন্য নিজের যোগ্যতার ফিরিস্তিটাও জোরালো হওয়া জরুরী। দুরদানা ইসলামের ব্যক্তিগত যোগ্যতার মাপকাঠিটা তেমনি জোরালো।
তবে ডলি বেগমের সঙ্গে দুরদানার পার্থক্য হচ্ছে- ডলির বেড়ে ওঠা। লেখাপড়ার প্রায় পুরোটাই কানাডায়।
অন্যদিকে দুরদানা বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়াশোনা করে তার পর অভিবাসী হয়েছেন। এসএসসির সম্মিলিত মেধা তালিকায় কুমিল্লা বোর্ড থেকে প্রথম স্থান অধিকার করা দুরদানা, অষ্ট্রেলিয়া এবং কানাডা থেকে দুটি মাষ্টার্স ডিগ্রী নিয়ে প্রাকৃতিক সম্পদ এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে পিএইচডি করেছেন। কানাডার মূলধারায় পুরষ্কার বিজযী গবেষক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
এদিকে ‘বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত’ পরিচয় নিয়ে দুরদানারা যখন ভোটে দাড়ান- তখন বাংলাদেশী কমিউনিটি সম্পর্কেও কানাডিয়ানদের মনে উচ্চ ধারনা তৈরি হয়।
এর আগে ক্যালগেরি থেকে খালিশ আহমেদও ফেডারেল নির্বাচেন প্রার্থী হয়েছিলেন। তার প্রোফাইলটাও ছিলো এমন উঁচু পর্যায়ের।
ডলির মতো, খালিশের মতো, দুরদানার মতো উচ্চ শিক্ষিত, পেশাদার, যোগ্য ব্যক্তিরা যখন কানাডার মূলধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়, তখন বাংলাদেশি কমিউনিটির মাথাও আরও উঁচু হয়ে যায়।
একুশের পদক পাওয়া বংশীবাদক ওস্তাদ আজিজুল ইসলামের মেয়ে দুরদানা ইসলামের হাত ধরে কানাডার রাজনীতিতে নতুন একটা সুর উঠুক, ম্যানিটোবায় বাংলাদেশীদের আরেকটা ইতিহাস নির্মিত হোক- এটাই এখন কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রত্যাশা।