ফিরলেন শ্রীদেবী, মোমের মূর্তি হয়ে

ফিরলেন শ্রীদেবী, মোমের মূর্তি হয়ে

এ যেন ফিরে এল মিস্টার ইন্ডিয়ার সেই শ্রীদেবী। ‘হাওয়া হাওয়াই’ গানে যেমনটি দেখা গিয়েছিল। ঝলমলে সোনালি রঙের পোশাকে, ঠিক সেই সাজে শ্রীদেবী ফিরলেন নিষ্প্রাণ, মোমের ভাস্কর্য হয়ে। জনপ্রিয় সেই গানে মোহময়ী এই অভিনেত্রী নাচিয়েছিলেন পুরো বলিউডকে। সিঙ্গাপুরে মাদাম তুসো জাদুঘরে সেই শ্রীদেবীর মোমের তৈরি ভাস্কর্যের উন্মোচনে তাই আবেগঘন হলো পরিবেশ। কাঁদলেন স্বজনেরা।

গত ১৩ আগস্ট শ্রীদেবীর জন্মদিনে মাদাম তুসো কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দেয়, বলিউডের এই কিংবদন্তি অভিনেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে তারা। একটি মোমের ভাস্কর্য সংরক্ষণ করা হবে এই বিখ্যাত জাদুঘরে। সিঙ্গাপুরের মাদাম তুসো মিউজিয়ামে আজ বুধবার উন্মোচন হলো সেই ভাস্কর্য। এই উপলক্ষে সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্বামী বনি কাপুর এবং কন্যা খুশি কাপুর ও জাহ্নবী কাপুর। শ্রীদেবীর এই মোমের ভাস্কর্যটি করা হয়েছিল আইকনিক ‘হাওয়া হাওয়াই’ গানের দৃশ্য থেকে। ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ ছবির সেই নাচের দৃশ্যটি দেখেননি এমন বলিউড দর্শক খুব কম আছেন।

অনুষ্ঠানের ভিডিও চিত্রে দেখা গেল, মায়ের মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে এক মুহূর্ত কী যেন ভাবলেন জাহ্নবী কাপুর। ঠিক কি ভেবেছিলেন তিনি? সেটি একমাত্র তিনিই জানেন। আর জানেন অন্তর্যামী। তবে ভিডিও এবং স্থিরচিত্রে স্পষ্ট, মায়ের মূর্তির আঙুলে যেন আঙুল রাখলেন জাহ্নবী। আর সেই দৃশ্যটি দর্শকদের বেশ মনে ধরেছে। এ সময় পুরো পরিবার আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে। ভাস্কর্য উন্মোচন করার মুহূর্তে কেঁদে ওঠেন শ্রীদেবীর স্বামী ও চলচ্চিত্র প্রযোজক বনি কাপুর। ততক্ষণে চোখের কোণ ভিজে উঠেছে শ্রীদেবীর দুই কন্যা জাহ্নবী ও খুশির। এ সময় জাহ্নবী কাপুর তাঁর বাবার হাত চেপে ধরে শান্ত করার চেষ্টা করেন।

ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ পায় এ অনুষ্ঠানের বেশ কিছু স্থিরচিত্র, যেখানে একটি ছবিতে দেখা যায়, আশির দশকের ‘মি. ইন্ডিয়া’ সিনেমার ‘হাওয়া হাওয়াই’ গানের দৃশ্যের শ্রীদেবী যেন সোনালি কাপড় ও মানানসই অলংকারে জীবন্ত দাঁড়িয়ে আছেন। পরের ছবিতে শ্রীদেবীর পরিবারের সব সদস্যকে একসঙ্গে দেখা যায়, সেখানে স্বামী ও দুই কন্যার মাঝে যেন আলো ছড়াচ্ছেন স্বয়ং শ্রীদেবী। উল্লেখ্য, ‘মি. ইন্ডিয়া’ ছবির প্রযোজক ছিলেন শ্রীদেবীর স্বামী বনি কাপুর। আর ছবিটি পরিচালনা করেন শেখর কাপুর। অবশ্য তারও অনেক পরে শ্রীদেবীর সঙ্গে বিয়ে হয় বনির।

ভারতের তো বটেই, বাংলাদেশের অনেক দর্শকের কাছে শ্রীদেবী শুধু বলিউডের নায়িকা নন, শ্রীদেবী মানে নস্টালজিয়া। তামিলনাড়ুতে ১৯৬৩ সালের ১৩ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন শ্রীদেবী। বাবা ছিলেন আইনজীবী। এক বোন ও দুই সৎভাই নিয়ে যৌথ পরিবারে দক্ষিণী আদর্শে বেড়ে ওঠা তাঁর। শিশুশিল্পী হিসেবে বলিউডে অভিষেক হয়। চিত্তাকর্ষক চোখ, রুপালি পর্দায় উপস্থিতি আর অভিনয় দক্ষতা তাঁকে তুমুল জনপ্রিয়তা এনে দেয়। তিনি হিন্দি ছবির পাশাপাশি তামিল, তেলেগু ও মালায়ালম ছবিতে সমানতালে কাজ করেছেন। ২০১৩ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে। গেল বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান শ্রীদেবী।

বিনোদন