জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে নিয়োগ দিতে জাতীয় পার্টি থেকে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) বিকালে জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের নেতৃত্বে কয়েকজন সংসদ সদস্য জিএম কাদেরের স্বাক্ষরিত চিঠি স্পিকারের দফতরে গিয়ে পৌঁছে দেন।
জাতীয় পার্টির চিঠিটি পাওয়ার বিষয়টি স্পিকারের একান্ত সচিব কামাল বিল্লাহ গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
চিঠির সঙ্গে দলটির ১৫ জন সংসদ সদস্যের সম্মতিপত্রও সংযুক্ত করে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘মহান জাতীয় সংসদে বর্তমানে জাতীয় পার্টির প্রধান বিরোধী দল হিসেবে রয়েছে। আপনি নিশ্চয় অবগত আছেন যে আমাদের দলের চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধী দলের নেতা বিগত ১৪ জুলাই ২০১৯ তারিখে ইন্তেকাল করেছেন।
ফলে মহান জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা পদটি বর্তমানে শূন্য রয়েছে। ইতোমধ্যে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়ামের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং পার্টির সংসদীয় দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্যরা, বিরোধী দলের নেতা হিসেবে ১৮ লালমনিরহাট-০৩ থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত আমি গোলাম মোহাম্মাদ কাদেরকে মহান সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার জন্য প্রস্তাব করছে।
অতএব উপরোক্ত বিষয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম এবং পার্টির সংসদীয় দলের মনোনীত সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে আমাকে নিয়োগ দানের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনাকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।’
উল্লেখ্য, গত ১৪ জুলাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
তবে গত এপ্রিলে অসুস্থকালীন অবস্থায় এরশাদ তার ভাই জিএম কাদেরকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করেন।
প্রয়াত এ রাষ্ট্রপতির মৃত্যুর পর এক সংবাদ সম্মেলনে পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরের নাম ঘোষণা করা হয়। সেদিন দলের মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, মৃত্যুর আগে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এ সিদ্ধান্ত দিয়ে গেছেন।
সংসদে এখন সংরক্ষিতসহ ২৫টি আসন আছে জাতীয় পার্টির। এর মধ্যে দলের এইচ এম এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য রংপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন হবে। এরশাদের স্ত্রী বেগম রওশন এরশাদ বর্তমানে সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতার পদে আছেন।
এদিকে চিঠিটির বিষয়ে জাতীয় পার্টির কোনো নেতা থেকে এখন পর্যন্ত কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমে দলটির অন্যতম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ ও শামীম হায়দার পাটোয়ারী কোনো বক্তব্য দেননি।
তবে পার্টির মহাসচিব ও দলের চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা চিঠি দেয়ার বিষয়ে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাংসদ শরীফুল ইসলাম জিন্নাহ।
প্রসঙ্গত সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা মন্ত্রী এবং উপনেতা প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা পান। জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী-বিধি অনুযায়ী বিরোধীদলীয় নেতা ও উপনেতার নিয়োগ দেন স্পিকার।