গত শুক্রবারে সহিংসতায় শিশুসহ কমপেক্ষ একশ’ নয় জন মানুষ হত্যার জন্য বিদ্রোহীদের দায়ী করেছে সিরীয় সরকার। এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী তীব্র সমালোচনা ও নিন্দার প্রেক্ষিতে রোববার সরকারের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ করা হয়।
বিরোধী ও মানবাধিকার কর্মীদের দেওয়া তথ্য মতে, গত শুক্রবার হোমস প্রদেশের হোলা শহরে সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর ভারী গোলাবর্ষণে ২৯ শিশুসহ শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। জাতিসংঘও পরে এ হতাহতের খবর নিশ্চিত করে।
এ ঘটনা সিরিয়ায় সহিংসতা বন্ধে জাতিসংঘ ও আরব লিগের যৌথ উদ্যোগে যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার ব্যর্থতাকে তুলে ধরল বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
এদিকে বিশ্ববাসীর বিবেক নাড়িয়ে দেওয়া এ ঘটনার জন্য বিদ্রোহীদের দায়ী করে সিরীয় কর্তৃপক্ষ রোববার বলেছে, এই ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের জন্য ‘সন্ত্রাসীরা’ দায়ী।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে সিরিয়ায় শুরু হওয়া প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বিরোধী বিক্ষোভ সহিংসতায় কমপেক্ষ ১০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে বলে জাতিসংঘের হিসাবে জানা যায়। কিন্তু ১৪ মাস ধরে চলা এ সহিংসতার মধ্যে গত শুক্রবারের ঘটনা সবচে বেদনাদায়ক এবং প্রাণঘাতী।
হত্যাযজ্ঞের নির্মমতার কথা উল্লেখ করে সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জিহাদ মাকদেসি রাজধানী দামেস্কে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘নারী, শিশু এবং বয়োবৃদ্ধদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সিরিয়ার বীর সেনাদের কর্মকাণ্ড নয় এটি।’
তবে বিরোধীরা বলছে, শুক্রবার হোলা শহরে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর আসাদের বাহিনী ভারী গোলা বর্ষণ করে। এসময় সরকারি বাহিনী এবং সুন্নি মুসলিমদের নেতৃত্বাধীন একটি সশস্ত্র গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ মুহূর্তে সিরিয়াতে অবস্থানরত জাতিসংঘের সামরিক ও বেসামরিক পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, শনিবার কমপক্ষে ৯২ জন মানুষ নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করা গেছে। নিহতদের মধ্যে ৩২টি শিশু রয়েছে যাদের বয়স ১০ বছরের মধ্যে। পরে আরো মৃতদেহ পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে বিরোধীরা।
পর্যবেক্ষকরা আরো জানিয়েছেন, সংঘর্ষের সময় কামান ব্যবহার করা হয়েছে যা শুধু আসাদ বাহিনীর কাছেই আছে। তবে নিহতদের সবার মৃত্যুর কারণ বিস্তারিত জানাননি তারা।
এদিকে শুক্রবারের ঘটনার জন্য দায়ীদের সনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন।