উত্তেজনার পারদ চড়িয়ে আইপিএলের শিরোপা জিতেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। ফাইনালে চেন্নাই সুপার কিংসকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে তারা।
চেন্নাই সুপার কিংস: ১৯০/৩ (২০ ওভার)
কলকাতা নাইট রাইডার্স: ১৯২/৫ (১৯.৪ ওভার)
ফল: কলকাতা নাইট রাইডার্স ৫ উইকেটে জয়ী
চেন্নাইয়ের হ্যাট্রিক শিরোপা জয়ের স্বপ্ন গুড়িয়ে আইপিএলে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয় বলিউড বাদশার কলকাতা।
খেলা অনেক বেশি নাটকীয়তা ছিলো। শেষ ওভারে কলকাতাকে করতে হতো ৯ রান। টি-টোয়েন্টিতে অসম্ভব কোন টার্গেট নয়। তারপরেও অজানা শঙ্কা ছায়া ফেলে নাইট শিবিরে। টেনশন আড়াল করতে প্রাণান্তকর চেষ্টা করেন বলিউড ডন চোখে রোদ চশমা দিয়ে।
কিন্তু দুই বঙ্গবীর এক ফুতে উড়িয়ে দেন ভয়। সাকিব আল হাসান এবং মনোজ তিওয়ারি ডোয়াইন ব্রাভোকে অসম্ভব সাহসের সঙ্গে মোকাবেলা করেন। হেরে যায় ক্যারিবীয় দৈত্য। প্রথম বলে ডট। পরের বলে সাকিব এক রান নিয়ে তিওয়ারিকে আক্রমণ দেন। তিনিই জয়ের নিশানা উড়ালেন। পর পর দু’বার বল সীমানা ছাড়া করে একছুটে চলে যান প্যাভিলিয়নে। উল্লাসে ফেটে পড়ে স্টেডিয়াম। শাহরুখ খান পড়িমরি করে ঢুকে পড়লেন মাঠে। বলিউড ডনের সামনে কোন প্রতিরোধ আসেনি। বরং খানের হাতে হাত মিলিয়ে ধন্য হলেন অনেকে।
কখনও কখনও নায়কের চেয়ে পাশ্বঁনায়কের অভিনয় বেশি আলোছড়ায়। তিওয়রিও তিন বলে ৯ রান করে প্রাদপ্রদীপের সব আলো কেড়ে নিলেন। শেষটা অত ভালো না হলে মানভিন্দর বিসলা ও জ্যাক ক্যালিসের ১৩৬ রানের জুটির কোন মূল্য থাকতো না। কলকাতা জেতায় বিসলার আট চার ও পাঁচ ছয়ে ৪৮ বলে ৮৯ রানের হারিক্যান ইনিংস আমলে নিলেন বিচারকরা। ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও পেলেন অমন সুন্দর একটা ইনিংস খেলার জন্য। অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর দুই রানে আউট হয়ে যায়ার পর বিসলার সঙ্গী ক্যালিসও অনিন্দ্য ইনিংস খেলেন। সাত চার ও এক ছয়ের মারে ৪৯ বলে ৬৯ রান করেন তিনি।
চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে খেলা হলেও এবারের শিরোপা যে কলকাতা জিতবে ভাগ্য দেবি তা আগে থেকে লিখে রেখেছিলেন। তা না হলে চেন্নাইয়ের বোলাররা এভাবে বেধড়ক পিটুনি খাবে কেন? হিলফেনহাস দুটি, মরকেল, অ্যাশউইন ও ব্রাভো একটি করে উইকেট নিলেও কলকাতার ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাসে ফাটল ধরাতে পারেননি।
চেন্নাই ১৯০ রানের বিশাল স্কোর গড়েও তা অক্ষত রাখতে পারেনি। হোম ভেন্যুতে আগে ব্যাট করতে নেমে মাইক হাসি ও মুরালি ভিজয়ের লড়াকু ব্যাটিংয়ে উদ্বোধনী জুটিতে ৮৭ রানের সংগ্রহ পায় চেন্নাই। ভিজয় ৩২ বলে ৪২ রান তুলে রজত ভাটিয়ার বলে ক্যাচ দেন সাকিবের হাতে। ওই ক্যাচ ধরায় পুরস্কারও পেলেন বাংলাদেশি অলরাউন্ডার। মাইক হাসি সজঘরে ফিরেন ৫৪ রানে। চারটি চার ও দুটি ছয়ের মারে ৪৩ বলে নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছেন অসি ব্যাটসম্যান। সুরেশ রায়না ৭৩ রানের দর্শনীয় একটি ইনিংস খেলেন। ৩৮ বলে তিনটি চার ও পাঁচটি ছয়ের মার আছে তার স্কোরে।