‘নির্বাচন আওয়ামী লীগের অধীনেই’

‘নির্বাচন আওয়ামী লীগের অধীনেই’

তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালে বিরোধী দলের দাবির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন আওয়ামী লীগের অধীনেই হবে।

শনিবার গণভবনে দলের মেহেরপুরের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “বর্তমান সরকার ৫ হাজার ১৭৫টি নির্বাচন যখন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পেরেছে, তাহলে জাতীয় নির্বাচনও অবশ্যই করতে পারবে।”

সংবিধান সংশোধনের ফলে তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি বিলোপ হওয়ায় আগামী জাতীয় নির্বাচন নির্বাচিত অর্থাৎ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেই হবে।

তবে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না দাবি করে বিরোধী দল নির্বাচনকালীর নির্দলীয় সরকার পদ্ধতি পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে আসছে।

শেখ হাসিনা বলেন, “নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ও সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে। নির্বাচনের সময় প্রশাসনসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবে। সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না।”

সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের সব পথ বন্ধ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “জনগণের ভাগ্য নিয়ে অনেক খেলা হয়েছে। আর কোনো খেলা আমরা চাই না।”

তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবি প্রত্যাখ্যান করে শেখ হাসিনা বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ওনার (খালেদা জিয়া) দুই ছেলেকে পিটিয়ে দেশের বাইরে বের করে দিয়েছে। কীভাবে তিনি ভুলে যান, ১/১১ এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা। সে সময়ে অত্যাচার-নির্যাতনের কথা তিনি কি ভুলে গেছেন?”

“তত্ত্বাবধায়ক এক সেট যায়, আরেক সেট আসে। তারা তো নির্বাচন দিতেই চায় না। আমাদের তো টেনে-হিঁচড়ে গ্রেপ্তার করে,” সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন তিনি।

তৃণমূল নেতাদের ওপর নিজের আস্থার কথা জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “আমাদের তৃণমূলকে কেউ বিভ্রান্ত করতে পারে না। আমাদের ওপরের মাথারা বিভ্রান্ত হয়, তাদের মাথা গুলিয়ে যায়।

“কিন্তু তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করে না। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কারণে। কারণ তাদের কেউ বিভ্রান্ত করতে পারেনি। ”

জনগণের আস্থার মর্যাদা দিতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

‘সব টেলিফোন রেকর্ড আছে’

হরতালে গাড়ি পোড়ানো এবং বোমা বিস্ফোরণের মামলায় বিরোধী দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের ‘হয়রানিমূলক’ভাবে আসামি করা হয়েছে বলে বিএনপির অভিযোগেওর জবাব দেন শেখ হাসিনা। ]

তিনি বলেন, যারা আন্দোলনের নামে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

“কারা নির্দেশ দিচ্ছে, সেটাই বড় কথা। সব টেলিফোন রেকর্ড আমাদের কাছে আছে,” বলেন শেখ হাসিনা।

মির্জা ফখরুল ইসলামসহ বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, তাদের নির্দেশেই বোমা হামলা ও গাড়ি পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে।

হরতালের মামলায় মির্জা ফখরুলসহ বিরোধী দলের ৩৫ নেতা বর্তমানে কারাবন্দি। বিএনপি বলছে, সরকারি দলই ওই ঘটনা ঘটিয়ে তার দায় বিরোধী দলের ওপর চাপাচ্ছে।

বিএনপি নেতাদের কারাবন্দি করার এই ঘটনা মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে যে সমালোচনা উঠেছে, তার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যারা বাসে আগুন দিচ্ছে, তাদের বিচার করতে গেলে বলা হচ্ছে, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। যারা পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করে বা গাড়ি ভাঙচুর করে, সেটা মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়?”

অন্যান্য