সত্যজিৎ রায় তার সৃষ্ট ফেলুদা চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলেছিলেন সৌমিত্র চট্টপাধ্যায়ের মাঝে। তারপর চরিত্রিটি পাকাপাকিভাবে পেয়ে যান সব্যাসাচী চক্রবর্তী। বহুমাত্রিক চরিত্রে অভিনয় করলেও ফেলুদা হিসেবেই দুই বাংলায় তুমুল জনপ্রিয় তিনি। অন্যদিকে এপার বাংলার সুবর্ণা মুস্তাফা তো অভিনয় জগতের কিংবদন্তি। এবার দুই বাংলার দুই মহাতারকাকে এক ফ্রেমে বন্দি করছেন বাংলাদেশি পরিচালক ফখরুল আরেফিন খান। শুভজিৎ রায়ের ‘পথের সাথী’গল্প অবলম্বনে তৈরি হচ্ছে ‘গণ্ডি’।
ধর্মীয় অনুশাসন, সমাজ একা মানুষের স্বাধীনতাকেও আটকে রাখে। খোলা আকাশে নিশ্বাস নেওয়ার, স্বাভাবিক বন্ধুতারও অধিকার নেই তার। দুই বয়স্ক মানুষ বাড়িতে একা। তাদের ছেলেমেয়েরা বিদেশে। তাদের মধ্যে আলাপ জমে। দেখা হয় রোজ। কিছু প্রেমাস্পর্শ। তারপর? তারা নিজের সিদ্ধান্তে তারা বাঁচতে চায়। কী সেই সিদ্ধান্ত? কেন সিদ্ধান্তের বিরোধী পক্ষ তৈরি হয়? এই নিয়েই চিত্রনাট্য লিখেছেন শুভজিৎ রায়।
এই ‘গণ্ডি’র বন্ধুতা কোনো সমাজ, ধর্ম বা কাঁটাতার মানে না। এখানে মানুষের অন্তর সমস্যার মানসিক দৃশ্যপট তুলে ধরা হয়। বন্ধুত্বের মতো মানবিক জায়গা আজ কোন পর্যায়ে দাঁড়িয়ে? ভিন্ন ধর্মে কি বন্ধুত্ব হয় না? বয়স্ক দুজন মানুষের বন্ধুতা কেন তার ছেলেমেয়েদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় না? সেই জায়গা থেকে ‘গণ্ডি’ শব্দটা বেছে নেওয়া। চিন্তার গণ্ডিবদ্ধতাকেই প্রশ্ন করছে এই ছবি। ধর্ম-বর্ণ-গোত্রকে ছাড়িয়ে ভারতের নদী স্রোত বয়ে যাবে নীল বন্ধুতার বাংলাদেশের মেঠো শরীরে!
লন্ডন আর কক্সবাজারে দুই প্রবীণ মানুষের বন্ধুতার গল্পের শুটিং হয়েছে। আরেফিন ভীষণ খুশি দুজনকে নিয়ে। তিনি কলকাতার এক দৈনিককে বলেছেন, ‘দুজনেই অভিজ্ঞ! আমিই বরং নতুন। পুরো টিমের সঙ্গে দারুণ সহযোগিতায় কাজ করছেন তারা। আর সব্যসাচী চক্রবর্তী বাংলাদেশে যে কী জনপ্রিয় তা উনি নিজেই জানতেন না। একজন রিকশাওয়ালাও শুটিংয়ের ফাঁকে সেলফি তুলে তাকে চমকে দেন।’