রাজধানীর বাংলামোটর এলাকা থেকে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে নিউ ইস্কাটন রোডের টিনশেডের একটি বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। স্বামীর মারধরে তিনি মারা গেছেন বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন ওই নারীর স্বজন ও প্রতিবেশীরা।
মারা যাওয়া গৃহবধূর নাম সাবিকুন নাহার (২৬)। আটক ব্যক্তির নাম কাজী মাসুদ। হাতিরঝিল থানা-পুলিশ তাঁকে আটক করেছে। স্বজনদের অভিযোগ, স্বামীর দ্বিতীয় বিয়েতে রাজি না হওয়ায় নাহারের ওপর নির্যাতন চালিয়েছনে তাঁর স্বামী মাসুদ। এই দম্পতির বাড়ি গোপালগঞ্জে।
সাবিকুন নাহারের মামাতো ভাই ইয়ামিন শেখ বলেন, নাহারদের আট থেকে দশ বছরের সংসার। তাঁরা নিজেদের পছন্দেই বিয়ে করেছিলেন। এই দম্পতির ছয় বছর বয়সী একটি ছেলে ও চার বছরের এক মেয়ে আছে। মাসুদ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়িচালক। সম্প্রতি তিনি পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন এবং দ্বিতীয় বিয়ের জন্য নাহারের কাছে অনুমতি চান। এতে নাহার সম্মতি না দেওয়া তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
ইয়ামিন জানান, গত মঙ্গলবার রাতে নাহার ও মাসুদের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে নাহারকে মারধর করেন মাসুদ। প্রতিবেশীরা ঠেকাতে গেলেও মাসুদ উল্টো চড়াও হন। ওই মারধরে নাহার আহত হলে ওই দিন মধ্যরাতে তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে বুধবার দুপুরে নাহারকে বাসায় আনা হয়।
ইয়ামিন বলেন, এরপর বাসায় রেখে নাহারের চিকিৎসা চলছিল। আজ তাঁর অবস্থার অবনতি হলে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন পথেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। দুপুরে নাহারের লাশ বাসায় আনা হয়। এ সময় প্রতিবেশীসহ নাহারের স্বজনেরা পুলিশে খবর দেন।
ইয়ামিনের অভিযোগ, মাসুদের মারধরের কারণেই তাঁর বোন মারা গেছেন। ইয়ামিন বলেন, নাহারের দুই গোড়ালি ও হাঁটুতে আঘাত করা হয়েছিল। হাসপাতালে এসব স্থানে ব্যান্ডেজ করা হয়। নাহারের পরিবারের পক্ষ থেকে মাসুদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে ইয়ামিন জানান।
হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাকিল জোয়ারদার বলেন, তিন দিন আগে সাবিকুন নাহার নামে ওই গৃহবধূকে মারধর করা হয় বলে আশপাশের লোকজন থানায় অভিযোগ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, মারধরের পর তাঁকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আজ সকালে সাবিকুন নাহার সেখানে মারা যান। এরপর তাঁর লাশ বাসায় আনা হয়।
শাকিল জোয়ারদার বলেন, প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ওই খবর পেয়ে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। লাশের সুরতহাল করা হবে। এ ছাড়া ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে ওই গৃহবধূর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তাঁর স্বামীকে পুলিশ আটক করেছে।