পানিসম্পদ মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন বলেছেন, ১৬২ কিলোমিটার দীর্ঘ পৌওলী, ধলেশ্বরী, বংশাই ও তুরাগ নদী খনন করে যমুনা থেকে ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীতে পানি আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যমুনার পানি বুড়িগঙ্গায় আসলে এই নদীর পানির দূষণ কমে যাবে।
শনিবার রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে ‘ঢাকা শহরে পানি সরবরাহে সততা ও স্বচ্ছতা: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসবকথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, সিরাজগঞ্জের হার্ড পয়েন্ট থেকে ধলেশ্বরী নদী পর্যন্ত যমুনা নদী খনন করা হয়েছে। এতে এখানে পানি প্রবাহ বাড়বে।
পানিসম্পদ মন্ত্রী আরও বলেন, ঢাকা শহরে পানি সরবরাহের জন্য ৮৮ শতাংশ পানি ভূগর্ভ থেকে তোলা হয়। এতে প্রতিবছর পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহার করা গেলে পানি সমস্যার সমাধান সম্ভব। তিনি পানি ব্যবহারে সচেতনতা বাড়ানোর ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেন।
‘পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে কাজ করা হচ্ছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া অনলাইনে করা হয়েছে। এছাড়া উন্নয়নমূলক কাজ মে মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
টিআইবির (ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ) অনুপ্রেরণায় গঠিত বাংলাদেশ ওয়াটার ইন্টিগ্রিটি নেটওয়ার্ক (বাউইন) এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস ডি এম কামরুল আলম চৌধুরী। বাউইনের পক্ষে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।
আলোচনায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জল পরিবেশ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী সভাপতি প্রকৌশল ম. ইনামুল হক ও ঢাকা ওয়াসার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. খন্দকার আজহারুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড মনিরুজ্জামান মিঞা প্রমুখ।
ঢাকা ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ঢাকা শহরের পানি সরবরাহ গ্রাউন্ড ওয়াটার থেকে সারফেস ওয়াটারের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ঢাকা ও আশপাশে জলাশয় ও নদীর অবৈধ দখলের কারণে পানিসম্পদের ওপর চাপ বাড়ছে। পানি সমস্যার সমাধানে সব ধরনের অবৈধ দখল প্রতিরোধে রাজনৈতিক সদিচ্ছার আহ্বান জানিয়ে তিনি প্রস্তাবিত জাতীয় পানি আইন প্রণয়নের আগে খসড়া প্রকাশ ও সংশিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সম্পৃক্ত করে মতামত ও পরামর্শ বিবেচনায় নিয়ে অগ্রসর হওয়ার দাবি জানান।
উল্লেখ্য, পানি খাতে সামগ্রিকভাবে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে টিআইবির অনুপ্রেরণায় বাউইন গঠন করা হয়েছে, এর মূল উদ্দেশ্য সরকার ও সরকারের বাইরে সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডারদের সম্পৃক্ত করে বাংলাদেশে পানি খাতে সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করা।