৪৫ রানে অলআউট হয়েও যখন ম্যাচ জেতা যায়

৪৫ রানে অলআউট হয়েও যখন ম্যাচ জেতা যায়

হেডিংলি টেস্ট শেষ হয়েছে চার দিন হলো। বিস্ময় এখনো কাটছে না অনেকের। বেন স্টোকসের দুর্দান্ত এক ইনিংসে সব ধারণা উল্টে ১ উইকেটের জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে ৬৭ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পরও টেস্ট জিতে ১৩১ বছর পুরোনো এক স্মৃতিও ফিরিয়ে এনেছে ইংল্যান্ড। টেস্ট ম্যাচে এক ইনিংসে ৭০ রানের নিচে অলআউট হয়েও কোনো দলের জয়ের সর্বশেষ নজির ছিল ১৮৮৮ সালে।

অ্যাশেজ বলেই হেডিংলি টেস্ট এত গুরুত্ব পেয়েছে। না হলে এক শর নিচে অলআউট হয়েও কদিন আগেই টেস্ট জিতেছে ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ নিয়ে লর্ডসে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে নেমে মাত্র ৮৫ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। পরে আইরিশদের দ্বিতীয় ইনিংস ৩৮ রানে শেষ করে দিয়ে বদলা নিয়েছিল ইংলিশরা। এক মাসের মধ্যেই এক শর নিচে গুটিয়ে গিয়েও টেস্ট জেতার নজির গড়ল ইংল্যান্ড।

এটুকু পড়েই মনে হতে পারে, এক মাসেই যদি দুবার এমন কীর্তি গড়া যায়, তাহলে আর প্রথম ইনিংসে ভালো করা নিয়ে এত বাড়াবাড়ি কেন? কারণ, ইংল্যান্ড যা করেছে সেটা স্বাভাবিক নয়। এক মাসেই দুবার হওয়া এক কাণ্ড এর আগের ১৪২ বছরেই হয়েছে মাত্র ১৪ বার! হ্যাঁ, এক শর নিচে গুটিয়ে গিয়েও টেস্ট জেতার নজির মাত্র ১৫টি। আর সেটা যদি দলের প্রথম ইনিংসে হয় তাহলে মাত্র ১৪বার।

বিশ্বকাপের পরই দুবার কাণ্ড করা ইংল্যান্ড বরাবরই এ কাজে পারদর্শী। এ পর্যন্ত সাতবার এমন ম্যাচে জয় পেয়েছে তারা। হেডিংলিতে এমন জয়ের উল্টো প্রান্তে থাকা অস্ট্রেলিয়াও এ কাজে খারাপ না। মোট চারবার এমন ম্যাচ জিতেছে তারা। যদিও ১৯৫০ সালেই সর্বশেষ এমন কিছু করতে পেরেছে তারা। দক্ষিণ আফ্রিকা আবার এ দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকেই এই তেতো স্বাদ উপহার দিয়েছে। একবার করে এমন জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা।

একটি দিকে ইংল্যান্ডকে অবশ্য টপকানো খুব কঠিন। টেস্টে সর্বনিম্ন ৪৫ রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ড আছে ইংল্যান্ডের। ১৮৮৭ সালে সিডনির সে টেস্টে তবু জয় পেয়েছিল ইংলিশরা। প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের ৪৫ রানের জবাবে অস্ট্রেলিয়া থেমেছিল ১১৯ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসেও ভালো করেনি ইংল্যান্ড। মাত্র ১৮৪ রান করেছিল সফরকারীরা। কিন্তু ১৩ রানের জয় পেতে ওটাই যথেষ্ট বানিয়ে দিয়েছিলেন বিলি বার্নস ও জর্জ লোহম্যান।

অস্ট্রেলিয়াও দুবার ৬০ ও ৬৩ রানে অলআউট হয়ে ম্যাচ জিতেছিল। এর মাঝে ওভালের ৬৩ রানের ঘটনাতেই জন্ম নিয়েছে অ্যাশেজ সিরিজ। কিন্তু কোনো দেশ নিজেদের ইতিহাসের সর্বনিম্ন স্কোরের ম্যাচকে জয়ে রূপ দিতে পারেনি। সবগুলো দলের সর্বনিম্ন স্কোরের রেকর্ড আর ব্যাটিং সহায়ক উইকেট বলছে, এমন কীর্তি এখন আর হয়তো সম্ভব হবেও না।

খেলাধূলা