রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ও তাদের সংকট সমাধানে বিশ্ব সম্প্রদায়ের আরো জোরালো ভূমিকা চায় বাংলাদেশ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিংকালে ওই প্রত্যাশার কথা জানান। এদিকে দুই দফায় প্রত্যাবাসন শুরুর উদ্যোগ ব্যর্থ হওয়ার পর চীন বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা চালাচ্ছে। ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, চীন মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাংলাদেশকে বৈঠকের ব্যাপারে জানাবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত ২২ আগস্ট একজন রোহিঙ্গাও মিয়ানমারে ফিরে না যাওয়ায় মিয়ানমার বাংলাদেশকে দায়ী করেছে। বাংলাদেশ গতকাল বিদেশি কূটনীতিকদের বলেছে, চুক্তি অনুযায়ী বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় তাদের দেশে ফেরত যেতে রাজি করানোর দায়িত্ব মিয়ানমারের। এটা আমাদের দায়িত্ব না। তারা তাদের দায়িত্ব পালন করেনি বলেই রোহিঙ্গারা যায়নি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রক্রিয়া খুব স্বচ্ছ। এখানে লুকানোর কিছু নেই। মিয়ানমার বলেছে, তারা অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। যদি করে থাকে তবে তাদের লোক তাদের বিশ্বাস করে না। সেখানে বিশ্বাসের ঘাটতি আছে। মিয়ানমার সেই ঘাটতি কমাতে ব্যর্থ হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার বারবার বাংলাদেশের সঙ্গে অঙ্গীকার করেছে যে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও স্বাধীনভাবে চলাফেরার সুযোগ সেখানে গেলে হবে। তাই যদি হয় অন্যদের নিয়ে তারা তা দেখায় না কেন? বাংলাদেশ এটিই সবাইকে বলেছে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফেরার জন্য বেশ কিছু দাবি তুলেছে। এগুলো পূরণের ব্যাপারে মিয়ানমারের চিন্তাভাবনা করা উচিত বলেও বাংলাদেশ আজকের ব্রিফিংয়ে জানিয়েছে।
বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের বক্তব্য প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যা করার করে যাবো, করছি। আপনারা যারা বিশ্ব নেতৃত্ব আছেন তাদের একটা দায়দায়িত্ব আছে। আমরা আবেদন করেছি। আপনারা আরো আগ্রাসী আরো বেশি করে উদ্যোগ নেবেন এই সমস্যা সমাধানের জন্য। কারণ এটি কেবল আমাদের সমস্যা না। আপনাদের সবার সমস্যা। আপনারা বিশ্ব নেতৃত্ব, সংস্থাগুলো আরো উদ্যোগ নেবেন যাতে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায় বাংলাদেশের পাশে আছে। তবে বাংলাদেশ তাদের আরো জোরালো ভূমিকা চায়।
তিনি বলেন, এনজিওগুলোর বিরূদ্ধে রোহিঙ্গা শিবিরে রাজনৈতিক তৎপরতা বা উস্কানি দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইভাবে রোহিঙ্গাদের মধ্যে যারা সন্ত্রাস করবে তাদের কোনো ধরনের ছাড় দেবে না সরকার।