রেসলিং তারকা ডোয়াইন ‘দ্য রক’ জনসনের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে বিশ্ব জানতে পেরেছে, তিনি বলেছেন, ‘আই ডু।’ অর্থাৎ তিনি আবারও বিয়ে করেছেন। ৩৪ বছর বয়সী গায়িকা, গীতিকার ও সংগীত প্রযোজক লরেন হাসিনের সঙ্গে বিয়ের পরে তোলা দুটি ছবি দিয়েছেন ডোয়াইন জনসন। ডোয়াইন আর লরেন বিয়ের ছবি আপলোড করে লিখেছেন, ‘উই ডু।’ পাশে দিন–তারিখ আর স্থানও লিখেছেন—১৮ আগস্ট ২০১৯, হাওয়াই। আরও লিখেছেন, ‘আমাদের আশীর্বাদ করুন।’ ইনস্টাগ্রামে মাত্র এক ঘণ্টায় ডোয়াইন ‘দ্য রক’ জনসন আর লরেন হাসিনের বিয়ের পরে তোলা ছবির নিচে লাইক জড়ো হয়েছে ৩৫ লাখ। আর হাজার হাজার ভক্তের অভিনন্দন আর ভালোবাসায় ভরে উঠছে মন্তব্যের উঠান।
প্রথম স্ত্রী প্রযোজক ড্যানি গার্সিয়ার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর আবারও বিয়ে করেছেন ডোয়াইন ‘দ্য রক’ জনসন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি তিন সন্তানের বাবা। ডোয়াইন জনসন ১৯৯৭ সালের ৩ মে ড্যানি গার্সিয়াকে বিয়ে করেন। ২০০১ সালে তাঁদের মেয়ে সিমোন আলেক্সান্দ্রা জন্মগ্রহণ করে। ২০০৭ সালের জুন মাসে ঘোষণা আসে যে তাঁরা বিবাহবিচ্ছেদ করেছেন এবং বাকি জীবন বন্ধু হিসেবে থাকবেন। এরপর তাঁর জীবনে আসে ৩৪ বছর বয়সী লরেন হাসিন। দীর্ঘদিনের সম্পর্ক তাঁদের। ঠিক কত দিনের, তা বলা যাবে না। তবে ২০১৫ সালে তিনি এসকয়্যারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি আর লরেন প্রায় আট–নয় বছর ধরে একসঙ্গে থাকছেন। সেই হিসেবে প্রায় ১২–১৩ বছরের সম্পর্ক তাঁদের।
পিপল ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডোয়াইন ‘দ্য রক’ জনসন বলেছেন, খুব বেশি ভাগ্যবান হলেই কেবল লরেন হাসিনের মতো মানুষের সঙ্গে প্রেম করা যায়। ২০১৬ সালে তাঁদের প্রথম সন্তান জেসমিন জন্ম নেয়। আর ২০১৮ সালে জন্ম নেয় এই জুটির দ্বিতীয় ও জনসনের তৃতীয় কন্যা টিয়ানা গিয়া।
ডোয়াইন জনসন ওরফে দ্য রক। ১৯৯১ সালে তিনি ছিলেন একজন সাধারণ মার্কিন তরুণ। ইউনিভার্সিটি অব মায়ামিতে পড়ার সময় মায়ামি হারিকেনস ফুটবল টিমের হয়ে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ জেতেন। এর পাঁচ বছর পর বদলে যায় তাঁর জীবন। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৪ সালে ‘দ্য রক’ নামে ওয়ার্ল্ড রেসলিং ফেডারেশনে (ডব্লিউডব্লিউএফ, বর্তমানে ডব্লিউডব্লিউই) তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এরপর অভিনয়কে পেশা বানাতে নেন ছয় বছরের বিরতি।
এরপর যখন ২০১১ সালে আবারও ফিরে আসেন ডব্লিউডব্লিউইয়ের রিংয়ে, সেদিন হলভর্তি দর্শক চিৎকার করে কাঁপিয়ে দিয়েছিল স্টেডিয়াম, জানিয়ে দিয়েছিলে দ্য রককে নিয়ে তাঁদের উন্মাদনা। ২০১৪ সাল পর্যন্ত তাঁকে দেখা গেছে রেসলিংয়ের রিংয়ে। এ বছর আগস্ট মাসেই রেসলিং থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন ১০ বারের এই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। তাঁর আত্মজীবনীমূলক বই ‘দ্য রক সেইজ…’ দীর্ঘদিন নিউইয়র্ক টাইমস বেস্ট সেলার তালিকার এক নম্বরে ছিল। তাঁকে বলা হয় ‘দ্য মোস্ট ইলেকট্রিফায়িং ম্যান অব স্পোর্টস এন্টারটেইনমেন্ট ইন হিস্ট্রি’।
‘দ্য মামি রিটার্নস’ (২০০১) দিয়ে চলচ্চিত্রে তাঁর যাত্রা হলেও প্রধান অভিনয়শিল্পী হিসেবে শুরু করেন ‘দ্য স্করপিয়ন কিং’ (২০০২) ছবির মধ্য দিয়ে। এই ছবির জন্য তিনি প্রায় ৫০ কোটি টাকা পারিশ্রমিক নেন। যা যেকোনো অভিনয়শিল্পীর প্রথম চলচ্চিত্রের জন্য জন্য রেকর্ড। তবে তিনি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পান ‘ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস’ সিরিজের চলচ্চিত্রগুলোর জন্য। উপহার দিয়েছেন ‘সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স’ ও ‘স্যান আন্ড্রেস’-এর মতো ব্লকব্লাস্টার হিট ছবিগুলো। ৪৭ বছর বয়সী এই তারকার নিজের একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানও আছে।
২০১৬ সালে ‘পিপল’ ম্যাগাজিনের মতে, বিশ্বের সবচেয়ে আবেদনময় পুরুষ ডোয়াইন ‘দ্য রক’ জনসন। সে বছর হলিউডের সর্বোচ্চ অর্থ উপার্জনকারী অভিনেতাও তিনি। টাইম ম্যাগাজিনের বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ তারকার তালিকায় তিনি দুবার স্থান পেয়েছেন, ২০১৬ সালে ও ২০১৯ সালে।