কোরবানির পশুর চামড়ার অস্বাভাবিক দরপতনের কারণ অনুসন্ধানে স্বাধীন তদন্ত কমিটি করার দাবিতে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে। আজ রবিবার (১৮ আগস্ট) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবী মহিউদ্দিন ফরহাদ হানিফ রিটটি করেন।
রিট আবেদনের পর আইনজীবী মহিউদ্দিন ফরহাদ নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের বেঞ্চে শুনানি হতে পারে বলে জানান এ আইনজীবী।
রিটে চামড়ার দরপতনের ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তা খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে কোরবানির পশুর চামড়ার মূল্যের অস্বাভাবিক দরপতন কেন অবৈধ হবে না- এ মর্মে রুল জারিরও আর্জি জানানো হয়েছে।
এবারের ঈদে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে চামড়ার দাম তলানিতে ঠেকেছে। এক লাখ টাকার একটি গরুর চামড়া ২০০ টাকায়ও বিক্রি হয়েছে। দাম না পাওয়ায় চামড়া মাটির নিচে পুঁতে ফেলার খবরও পাওয়া গেছে। প্রতিবছরের মতো এবারও সিন্ডিকেটের কারণে চামড়ার বাজার ধস নেমেছে। চামড়াশিল্পের পরিস্থিতির দায় নিতে রাজি নয় সরকারি কোনো সংস্থাই। এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে করণীয় নিয়েও কোনো আলোচনা দেখা যায় না শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে। বছরের পর বছর এভাবে কাঁচা চামড়ার দাম নিয়ে নৈরাজ্য চললেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও শিল্প মন্ত্রণালয় কার্যকর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবছরই একই ঘটনা ঘটছে। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বড় ধরনের পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। সোয়া কোটি পশুর চামড়া প্রক্রিয়াকরণ করার কোনো পরিকল্পনা এখনো নেওয়া হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে চামড়া রাখার মতো কোনো স্থান ঠিক করা হয়নি। সারা দেশে বিসিকের প্লট থাকলেও সেখানেও চামড়া রাখার কোনো ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। যতটুকু হয়েছে ব্যক্তি খাতের হাত ধরে।
গতকাল শনিবার থেকে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে চামড়া কিনতে ট্যানারি মালিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু হঠাৎ গতকাল রাজধানীর পোস্তায় বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে বকেয়া টাকা পেলে তবে তারা চামড়া বিক্রি করবে। তার আগে নয়। ট্যানারির মালিকরা বেশ কয়েক বছর ধরে আড়তদারদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করায় তারা এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে বলে জানান সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান। এমন এক পরিস্থিতিতে আইনজীবী মহিউদ্দিন ফরহাদ হানিফ আজ হাইকোর্টে রিটটি করলেন।